হাবিবুর রহমান(সেনবাগ প্রতিনিধি)-
নোয়াখালীতে ৭০০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রয় শুরু হয়েছে। কিছুটা কম দামে মাংস কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা।
শনিবার (২৩ মার্চ) সকাল ১০ টা থেকে সেনবাগ উপজেলার পাইলট স্কুলের সামনে অস্থায়ী দোকানে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।
জানা যায়, প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণে ৭০০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস, এক ডজন ডিম ১০৫ টাকায় ও ৮০ টাকা লিটারে গরুর দুধ বিক্রির কার্যক্রম হাতে নেয় সেনবাগ উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর।
শনিবার (২৩ মার্চ) সকাল ১০ টায় কার্যক্রমটির উদ্বোধন করা হয়। এসময় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, সেনবাগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিসান বিন মাজেদ, সেনবাগ পৌরসভার মেয়র আবু নাছের ভিপি দুলাল, সেনবাগ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ তারেক মাহমুদ, প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. জুয়েল চন্দ্র ভৌমিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বাজারের থেকে কম দামে ডিম, দুধ ও গরুর মাংস কিনতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু নামের এক ক্রেতা বলেন, গোশত ব্যবসায়ীদের যে সিন্ডিকেট তা ভাঙ্গার লক্ষ্যে প্রশাসনের যে উদ্যোগ তাকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা আশাকরি এভাবে অব্যাহত থাকলে সারা বাংলাদেশে গোশত বিক্রির সিন্ডিকেট ভাঙ্গবে। নিম্ন আয় ও স্বল্প আয়ের মানুষ প্রাণিজ জাতীয় খাদ্য কিনতে পারবে। মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করতে পারবে।
জাকির হোসেন নামের আরেক ক্রেতা বলেন, সারাদেশে ন্যায্য মূল্যে গোশত বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু নোয়াখালীয়ে সিন্ডিকেট শক্তিশালী। আমরা চাই প্রশাসনের এভাবে অব্যহত রাখুক। তাহলে সিন্ডিকেট ভাঙবে এবং আমরা উপকৃত হবো।
মাংস বিক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, প্রশাসন বলেছেন ৭০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করতে, আমি নিজের খামার থেকে গরু দিয়েছি। মানুষ মাংস, ডিম দুধ কিনতে পেরে খুশী। তবে আমাদের এই ব্যবসা টা মরে গেছে। আমি প্রতিদিন ৮-১০ টা গরু বিক্রি করতাম এখন সেই অবস্থা নাই।
সেনবাগ পৌরসভার মেয়র আবু নাছের ভিপি দুলাল বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে এবং মাংসের বাজার দর নিয়ন্ত্রণে রাখতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ এক কেজি মাংস কিনতে পারবেন; এক ডজন ডিম ও এক লিটার দুধ কিনতে পারবে। আমরা পৌরসভার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো।
সেনবাগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিসান বিন মাজেদ বলেন, আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি এবং সরকারি নির্ধারিত দামে পণ্য বিক্রি না করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছি। তবে আমরা গরু মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিলাম না। তাই উদ্যোগ নিয়ে সুস্থ ও সবল গরুর মাংস ৭০০ টাকায় বিক্রি করছি। এছাড়াও দুধ ও ডিম সুলভ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। এই সুলভ মূল্যের প্রভাব বাজারে ইতমধ্যে পড়েছে। যারা ৮৫০ টাকা বিক্রি করতো এখন তারাও ৭০০ টাকা বিক্রি করবে। এতে করে ভোক্তারা উপকৃত হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক স্যারের পরামর্শে আমাদের উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে কেবল সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য। নিরাপদ প্রাণি পুষ্টি মানুষের চাহিদার বাহিরে চলে যাচ্ছে তাই মানুষ উদ্বুদ্ধ করতে এমন উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে ঢাকার ২৫ টি পয়েন্টে বিক্রি হচ্ছে। আগামীতে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিভিন্ন উপজেলার বড় বাজার গুলোতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারদর যাচাইয়ে নিয়মিত জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। এসময় নির্ধারিত দামে বিক্রি না করলে জরিমানাও করা হচ্ছে। জেলা শহরে আমরা সরকারি নির্ধারিত দামে গরুর মাংস বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছি। এসব উদ্যোগ বাজার নিয়ন্ত্রণ আসা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : এডভোকেট সালাহ উদ্দিন মাহমুদ মাসুম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অহিদ উদ্দিন মাহমুদ মুকুল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : জান্নাতুল ফেরদৌস প্রিয়া