আমির হামজা ( হাতিয়া প্রতিনিধি)-
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় রাক্ষুসে সাকার ফিশ পাওয়া গেছে।
আজ শনিবার (১ জুন) সকালে হাতিয়া পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের ওছখালী খালে মাছটি ধরা পড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় বাসিন্দা বেচু মিয়া ওছখালী খালে জাল ফেললে মাছটি ধরা পড়ে। মাছটি দেখতে ব্যতিক্রম হওয়ায় প্রথমে তিনি ভয় পেয়ে যান। তারপর একেক জন মাছটির একেক নাম দেন। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক মানুষজন মাছটিকে এক নজর দেখতে ভিড় জমায়। মাছটির শারীরিক গঠন আকর্ষণীয়। কাঁটাযুক্ত শরীরজুড়ে তার নান্দনিক কারুকাজ। নাম সাকার মাউথ ক্যাটফিশ। শোভাবর্ধনের জন্য এই মাছ অ্যাকুরিয়ামে রাখা হয়।
মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, সাকার দেশীয় প্রজাতির মাছের ডিম ও রেণু খেয়ে মাছের বংশবিস্তারে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এ মাছ যে কোনো পরিবেশে বাঁচতে পারে এবং দ্রুত বংশবৃদ্ধির কারণে দেশীয় প্রজাতির মাছের সঙ্গে খাদ্য ও বাসস্থান নিয়ে প্রতিযোগিতা করে। মাছটি খাওয়া যায় না। সর্বপরি সাকার মাছ জলজ জীববৈচিত্র্য নষ্ট করে। ফলে মাছটি নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
বেচু মিয়া বলেন, এই মাছ খালে পাওয়া গেছে। এটার নাম কী, খাওয়া যাবে কিনা কিছুই আমি জানি না। মাছটার পুরো গায়ে কাঁটা আছে। মানুষজন বলল এটা নাকি সাকার ফিশ।
স্থানীয় যুবক বাবলা মিয়া বলেন, খবর পেয়ে মাছটি দেখতে যাই। পরে অনলাইনে সার্চ করে দেখি এটি ভয়ংকর সাকার ফিশ। এই মাছ যেখানে থাকে সেখানে অন্য মাছ হয় না। এরা মাছের রেণু খেয়ে ফেলে। এবারই আমি প্রথম হাতিয়ায় মাছটি দেখেছি। আবার কেউ কেউ আগেও দেখেছে বলে জানান। ওছখালী খালে জোয়ার আসে। হয়তো নদী থেকে এসেছে অথবা কারও অ্যাকুরিয়াম থেকে এসেছে।
হাতিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহাদ হাসান বলেন, এই মাছ অ্যাকুরিয়ামের শোভাবর্ধনের জন্যই আনা হয়েছিল এই দেশে। কিন্তু অসচেতনতার কারণে এটি আমাদের জলাশয়ে পাওয়া গেছে। হাতিয়া উপজেলায় সম্ভবত এটির প্রথম দেখা মিলল। যিনি মাছটি পেয়েছেন তার সঙ্গে কথা বলে সরেজমিনে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, সাকার মাছ চাষ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। হাতিয়ায় যে মাছটি পাওয়া গেছে এটিকে সাকার মাউথ ক্যাটফিশ বলে অভিহিত করা হয়। সবার প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে যে পুকুর, জলাশয় কিংবা নদীতে এ মাছ পাওয়া যাবে সেটিকে যেন ধ্বংস করা হয়। কারণ সাকার ফিশ বা সাকার মাছ অন্য মাছগুলো খুব দ্রুত খেয়ে ফেলে। এ বিষয়ে জেলায় জেলে ও সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে হবে