মোঃ নুর হোসাইন
ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে নোয়াখালী। প্রায় দুপুর পর্যন্ত এই ঘন কুয়াশা বিরাজমান থাকছে। এতে সড়কে যান চলাচল হচ্ছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। তাপমাত্রা মাপন যন্ত্রের পারদ কিছুটা ওপরে উঠলেও কমেনি শীতের তীব্রতা। ঘন কুয়াশা আর শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে জেলার সর্বত্র ঘন কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। এতে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। সকাল ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা দেখা গেছে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৬ ডিগ্রি ২ সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ।
জেলা শহরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, ভোর থেকে কুয়াশার ঘনত্ব বেশি থাকায় যানবাহন চলাচলে অসুবিধা হয়। ফলে গাড়িগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা যায়। এ কারণে সকাল থেকে শহরসহ জেলার সঙ্গে বিভিন্ন উপজেলা ও দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল রয়েছে সীমিত।
পৌর শহরের কয়েকজন রিকশাচালক বলেন, রিকশা না নিয়ে বের হলে পেট চলবে না। এই রিকশা চালিয়ে পরিবার চালাতে হয়। তাই প্রতিদিন খুব ভোরেই রিকশা নিয়ে শহরে আসি।
সুবর্ণচর উপজেলার কৃষক আবদুর রহিম বলেন, কুয়াশার জন্য জমিতে যেতে পারছিলাম না। তারপরও দেখে আসছি আবাদি জমিগুলো ঘন কুয়াশায় সরিষা ও মুগডাল দেখতে অসাধারণ লেগেছে। তবে কুয়াশা অব্যাহত থাকলে আমাদের ফসলের ক্ষতি হতে পারে।
জেলার সদর থেকে ছেড়ে যাওয়া ঢাকাগামী একুশে এক্সপ্রেস পরিবহনের চালক বাহার মিয়া বলেন, ঘন কুয়াশার মধ্যে গাড়ি চালানো ঝুঁকি, তাই ঝুঁকি এড়াতে গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে চালাতে হচ্ছে।
জেলা শহরের বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, ভোরে প্রচুর কুয়াশা থাকে। সুর্যের দেখা পাওয়া যায় দুপুরে। দিন দিন তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও শীতের তীব্রতা কমেনি। ছিন্নমূল ও অসহায় নিম্নআয়ের মানুষ দুর্ভোগে রয়েছে।
নোয়াখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, নোয়াখালীতে আজ সর্বনিম্ন ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আজ গতকালের চেয়ে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও সপ্তাহ জুড়ে শীতের দাপট থাকবে। যদি বৃষ্টির হয় তাহলে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, শীতে যেন কোনো অসহায় মানুষ কষ্ট না পায় সেজন্য আমাদের সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ কম্বল বিতরণ করছেন। আমি নিজেও রেলস্টেশনসহ বিভিন্নস্থানে কম্বল বিতরণ করেছি। এছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেকেই শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। আমি মনে করি প্রতিটি সচ্ছল মানুষের উচিত শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো।