১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নয় বছর বয়সে হাতে দৃষ্টিনন্দন কোরআন শরীফ লিখে এলাকায় হইচই ফেলে দিয়েছেন ক্ষুদে শিক্ষার্থী নুদার

  • আপডেট: ০৬:১৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ৬ মার্চ ২০২৪
  • ২০৩৪

মোঃ নুর হোসাইন-
মাত্র নয় বছর বয়সে নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ক্ষুদে শিক্ষার্থী নূরে জারিন নুদারের হাতে লেখা দৃষ্টিনন্দন কোরআন শরীফ দেখে বিস্মিত এলাকাবাসী। সে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৯ নাম্বার ওয়ার্ডের আদর্শপাড়ার নুরুল হুদা মামুন ও শারমিন আক্তার দম্পতির মেয়ে।
২০২২ সালে নূরে জারিন নুদার স্থানীয় ইকরা আরাবিয়া মাদরাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ১০ মাস সময় নিয়ে তিন খণ্ডের এ কোরআন শরীফ লেখে। নুদারের বর্তমান বয়স ১১ বছর। সে এখন বসুরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দারুল ইহসান গার্লস মাদরাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।
নুদারের বাবা নুরুল হুদা মামুন বলেন, চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় সুন্দর আরবি হাতের লেখা দেখে তাকে কোরআন শরীফ লিখতে উদ্বুদ্ধ করি। এতে তাকে ৬০০ পৃষ্ঠা কাগজ ও ৫৫টি কলম কিনে দিই। পরে তার লেখা কোরআন ইকরা আরাবিয়া মাদরাসার শিক্ষক মুফতি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল নোমান ভুলত্রুটি শুদ্ধ করে দেন। তিনি আরও বলেন, নুদারের হাতে লেখা কোরআন তিনখণ্ডে বাঁধাই করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। আমরা প্রচারের উদ্দেশ্যে নয়, শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নুদারকে কোরআন লিখতে উৎসাহ দিয়েছি। এরইমধ্যে সে বেশ কয়েকটি পুরস্কারও পেয়েছে। তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।
নুদারের মা শারমিন আক্তার বলেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী স্কুল-কলেজে পড়েছি। কিন্তু দ্বীনি শিক্ষার জন্য নুদারকে মাদরাসায় ভর্তি করি। চতুর্থ শ্রেণিতে ওঠার পর তার হাতের লেখা দেখে কোরআন লিখতে উৎসাহ দিই। লেখার পর এখন অনেক আত্মীয়-স্বজন তার লেখা কোরআন শরীফ দেখতে আসেন। বিষয়টি আমাদের কাছে অনেক ভালো লাগে।
ইকরা আরাবিয়া মাদরাসার শিক্ষক মুফতি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, নুদার অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্রী। এ বয়সে তার এমন প্রতিভা দৃষ্টান্তের দাবি রাখে। আমি সাধ্যমতো তাকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। নুদারের মতো অন্য শিক্ষার্থীরা কোরআন লেখায় এগিয়ে এলে তাদেরও সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
নূরে জারিন নুদারের সহপাঠী লামিয়া বলেন, নূরে জারিন নুদারের মতো আমরাও ভালো কিছু করতে চাই। সে খুব ভালো। সবার সঙ্গে সুন্দর করে কথা বলে। তার লেখা দৃষ্টিনন্দন কোরআন ছুঁয়ে দেখছি। অনেক ভালো লেগেছে।
ওই মাদরাসার আরবি শিক্ষক আলী হোসাইন মাহমুদ বলেন, যে বয়সে বাচ্চারা মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকে, ঠিক সেই বয়সে মেধাবী ছাত্রী নুদারের হাতে লেখা কোরআন সবাইকে মুগ্ধ করেছে। আমি তার জন্য দোয়া করি। সে যেন ভবিষ্যতে আরও অনেক বড় কিছু করতে পারে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারি বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। খোঁজ নিয়ে ওই ছাত্রীকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

সর্বাধিক পঠিত

নোবিপ্রবি ছাত্রী হলে অগ্নিকাণ্ড, পরীক্ষা স্থগিত

নয় বছর বয়সে হাতে দৃষ্টিনন্দন কোরআন শরীফ লিখে এলাকায় হইচই ফেলে দিয়েছেন ক্ষুদে শিক্ষার্থী নুদার

আপডেট: ০৬:১৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ৬ মার্চ ২০২৪

মোঃ নুর হোসাইন-
মাত্র নয় বছর বয়সে নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ক্ষুদে শিক্ষার্থী নূরে জারিন নুদারের হাতে লেখা দৃষ্টিনন্দন কোরআন শরীফ দেখে বিস্মিত এলাকাবাসী। সে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৯ নাম্বার ওয়ার্ডের আদর্শপাড়ার নুরুল হুদা মামুন ও শারমিন আক্তার দম্পতির মেয়ে।
২০২২ সালে নূরে জারিন নুদার স্থানীয় ইকরা আরাবিয়া মাদরাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ১০ মাস সময় নিয়ে তিন খণ্ডের এ কোরআন শরীফ লেখে। নুদারের বর্তমান বয়স ১১ বছর। সে এখন বসুরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দারুল ইহসান গার্লস মাদরাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।
নুদারের বাবা নুরুল হুদা মামুন বলেন, চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় সুন্দর আরবি হাতের লেখা দেখে তাকে কোরআন শরীফ লিখতে উদ্বুদ্ধ করি। এতে তাকে ৬০০ পৃষ্ঠা কাগজ ও ৫৫টি কলম কিনে দিই। পরে তার লেখা কোরআন ইকরা আরাবিয়া মাদরাসার শিক্ষক মুফতি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল নোমান ভুলত্রুটি শুদ্ধ করে দেন। তিনি আরও বলেন, নুদারের হাতে লেখা কোরআন তিনখণ্ডে বাঁধাই করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। আমরা প্রচারের উদ্দেশ্যে নয়, শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নুদারকে কোরআন লিখতে উৎসাহ দিয়েছি। এরইমধ্যে সে বেশ কয়েকটি পুরস্কারও পেয়েছে। তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।
নুদারের মা শারমিন আক্তার বলেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী স্কুল-কলেজে পড়েছি। কিন্তু দ্বীনি শিক্ষার জন্য নুদারকে মাদরাসায় ভর্তি করি। চতুর্থ শ্রেণিতে ওঠার পর তার হাতের লেখা দেখে কোরআন লিখতে উৎসাহ দিই। লেখার পর এখন অনেক আত্মীয়-স্বজন তার লেখা কোরআন শরীফ দেখতে আসেন। বিষয়টি আমাদের কাছে অনেক ভালো লাগে।
ইকরা আরাবিয়া মাদরাসার শিক্ষক মুফতি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, নুদার অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্রী। এ বয়সে তার এমন প্রতিভা দৃষ্টান্তের দাবি রাখে। আমি সাধ্যমতো তাকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। নুদারের মতো অন্য শিক্ষার্থীরা কোরআন লেখায় এগিয়ে এলে তাদেরও সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
নূরে জারিন নুদারের সহপাঠী লামিয়া বলেন, নূরে জারিন নুদারের মতো আমরাও ভালো কিছু করতে চাই। সে খুব ভালো। সবার সঙ্গে সুন্দর করে কথা বলে। তার লেখা দৃষ্টিনন্দন কোরআন ছুঁয়ে দেখছি। অনেক ভালো লেগেছে।
ওই মাদরাসার আরবি শিক্ষক আলী হোসাইন মাহমুদ বলেন, যে বয়সে বাচ্চারা মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকে, ঠিক সেই বয়সে মেধাবী ছাত্রী নুদারের হাতে লেখা কোরআন সবাইকে মুগ্ধ করেছে। আমি তার জন্য দোয়া করি। সে যেন ভবিষ্যতে আরও অনেক বড় কিছু করতে পারে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারি বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। খোঁজ নিয়ে ওই ছাত্রীকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।