১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোনো প্রতিবন্ধকতাই দমাতে পারেনি হুইল চেয়ারে ভর দিয়েই মানুষের পাশে শাহনাজ

  • আপডেট: ০২:২৬:২৩ অপরাহ্ণ, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪
  • ১৩০৯

স্টাফ রির্পোটার-
শাহনাজ বেগম। চার বছর আগে হারিয়েছেন স্বামীকে। হুইল চেয়ারে করছেন চলাফেরা। এরপরও কোনো প্রতিবন্ধকতাই দমিয়ে রাখতে পারেনি তাকে। শ্রমিক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক গভর্নর মরহুম নুরুল হক মিয়া এমপির পুত্রবধূ শাহনাজ বেগম স্ট্রোক করে দীর্ঘদিন হুইল চেয়ারে চলাফেরা করছেন। রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে উঠা শাহনাজ বেগমের কাছ গিয়ে কেউ কখনো আশাহত হননি।
নারীর ক্ষমতায়নে শাহনাজ বেগম বেগমগঞ্জ উপজেলার এক দৃষ্টান্ত। তিনি ২০০৯ সালে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে জনপ্রতিনিধি হন ৷ তার স্বামী মৃত ওমর ফারুক বাদশা ছিলেন বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বামী ওমর ফারুক বাদশা মারা গেলে পদটি শূন্য হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকার মাঝি হিসেবে নির্বাচিত করেন শাহনাজ বেগমকে। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে স্ট্রোক করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বর্তমানে হুইল চেয়ারে করে করছেন অফিস।
শাহনাজ বেগমের শ্বশুর সাবেক গভর্নর মরহুম নুরুল হক মিয়া ও স্বামী ওমর ফারুক বাদশা মিয়া যেমন মানুষের হাড়ির খবর জানতেন। ঠিক শাহনাজ বেগমও তাই। ২০০৯ সালে নারী নেত্রী হিসেবে উপজেলার মানুষের মাঝে ছিলেন এবং এখন পর্যন্ত তিনি আছেন। তিনি শারীরিক অসুস্থ হলেও মনের দিক থেকে সুস্থ।
বেগমগঞ্জের বাসিন্দা জিয়াউল হক ভুইয়া বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা যে অনেক মানুষকে দমিয়ে রাখতে পারে না, এমন অসংখ্য দৃষ্টান্ত আমাদের চারপাশেই রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন হলেন শাহনাজ বেগম। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে নারীদের ক্ষমতায়নে কাজ করছেন ঠিক একইভাবে শাহনাজ বেগমও অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি নারীদের জন্য কাজ করে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। নারীরা পিছিয়ে নেই তিনিই তার প্রমাণ।
নরোত্তমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর খোকন বলেন, অসুস্থ হলেই সব শেষ তা কিন্তু নয়। শাহনাজ বেগম অসুস্থ হলেও তিনি থেমে নেই। কিছুটা সুস্থ হয়েই ফিরে এসেছেন জনসেবায়। নারীদের কর্মসংস্থান, মাথা গোঁজার ঠাঁই, চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ সবই তিনি করেছেন। আগামীতেও যেন করতে পারেন সেই দোয়া করছি।
শাহনাজ বেগমের বড় ছেলে ইমরান নুর রফী বলেন, ছোটবেলায় দেখেছি আমাদের বাড়িতে বড় বড় পাতিলে চা বানাতেন মা। তিনি কখনো কাউকে খালি হাতে ফেরত দেননি। তিনি অসংখ্য নারীকে স্বাবলম্বী করেছেন। আমার মা বর্তমানে অসুস্থ তবুও তিনি থেমে যাননি। তিনি যাদের স্বাবলম্বী করেছেন তারা ভালো আছেন। আমাদের পেছনে ঠিকমতো সময় দিতে পারেননি তিনি। যেখানে স্বামী পরিত্যক্তা মহিলা পেয়েছেন, বিধবা মহিলা পেয়েছেন তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করেছেন তিনি।
শাহনাজ বেগম বলেন, স্ট্রোক করে আমি অসুস্থ। আমার কেবল বাম হাত কাজ করে। আমি মনের শক্তি দিয়ে আমার কাজগুলো করছি। মানুষের সেবা করতে গিয়ে সংসার সন্তান সামলাতে পারিনি। প্রতিবন্ধকতা থাকবেই। আমৃত্যু মানুষের সেবা করে যাব যেভাবে আমার স্বামীও শশুর করেছেন।

সর্বাধিক পঠিত

নোবিপ্রবি ছাত্রী হলে অগ্নিকাণ্ড, পরীক্ষা স্থগিত

কোনো প্রতিবন্ধকতাই দমাতে পারেনি হুইল চেয়ারে ভর দিয়েই মানুষের পাশে শাহনাজ

আপডেট: ০২:২৬:২৩ অপরাহ্ণ, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪

স্টাফ রির্পোটার-
শাহনাজ বেগম। চার বছর আগে হারিয়েছেন স্বামীকে। হুইল চেয়ারে করছেন চলাফেরা। এরপরও কোনো প্রতিবন্ধকতাই দমিয়ে রাখতে পারেনি তাকে। শ্রমিক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক গভর্নর মরহুম নুরুল হক মিয়া এমপির পুত্রবধূ শাহনাজ বেগম স্ট্রোক করে দীর্ঘদিন হুইল চেয়ারে চলাফেরা করছেন। রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে উঠা শাহনাজ বেগমের কাছ গিয়ে কেউ কখনো আশাহত হননি।
নারীর ক্ষমতায়নে শাহনাজ বেগম বেগমগঞ্জ উপজেলার এক দৃষ্টান্ত। তিনি ২০০৯ সালে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে জনপ্রতিনিধি হন ৷ তার স্বামী মৃত ওমর ফারুক বাদশা ছিলেন বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বামী ওমর ফারুক বাদশা মারা গেলে পদটি শূন্য হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকার মাঝি হিসেবে নির্বাচিত করেন শাহনাজ বেগমকে। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে স্ট্রোক করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বর্তমানে হুইল চেয়ারে করে করছেন অফিস।
শাহনাজ বেগমের শ্বশুর সাবেক গভর্নর মরহুম নুরুল হক মিয়া ও স্বামী ওমর ফারুক বাদশা মিয়া যেমন মানুষের হাড়ির খবর জানতেন। ঠিক শাহনাজ বেগমও তাই। ২০০৯ সালে নারী নেত্রী হিসেবে উপজেলার মানুষের মাঝে ছিলেন এবং এখন পর্যন্ত তিনি আছেন। তিনি শারীরিক অসুস্থ হলেও মনের দিক থেকে সুস্থ।
বেগমগঞ্জের বাসিন্দা জিয়াউল হক ভুইয়া বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা যে অনেক মানুষকে দমিয়ে রাখতে পারে না, এমন অসংখ্য দৃষ্টান্ত আমাদের চারপাশেই রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন হলেন শাহনাজ বেগম। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে নারীদের ক্ষমতায়নে কাজ করছেন ঠিক একইভাবে শাহনাজ বেগমও অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি নারীদের জন্য কাজ করে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। নারীরা পিছিয়ে নেই তিনিই তার প্রমাণ।
নরোত্তমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর খোকন বলেন, অসুস্থ হলেই সব শেষ তা কিন্তু নয়। শাহনাজ বেগম অসুস্থ হলেও তিনি থেমে নেই। কিছুটা সুস্থ হয়েই ফিরে এসেছেন জনসেবায়। নারীদের কর্মসংস্থান, মাথা গোঁজার ঠাঁই, চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ সবই তিনি করেছেন। আগামীতেও যেন করতে পারেন সেই দোয়া করছি।
শাহনাজ বেগমের বড় ছেলে ইমরান নুর রফী বলেন, ছোটবেলায় দেখেছি আমাদের বাড়িতে বড় বড় পাতিলে চা বানাতেন মা। তিনি কখনো কাউকে খালি হাতে ফেরত দেননি। তিনি অসংখ্য নারীকে স্বাবলম্বী করেছেন। আমার মা বর্তমানে অসুস্থ তবুও তিনি থেমে যাননি। তিনি যাদের স্বাবলম্বী করেছেন তারা ভালো আছেন। আমাদের পেছনে ঠিকমতো সময় দিতে পারেননি তিনি। যেখানে স্বামী পরিত্যক্তা মহিলা পেয়েছেন, বিধবা মহিলা পেয়েছেন তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করেছেন তিনি।
শাহনাজ বেগম বলেন, স্ট্রোক করে আমি অসুস্থ। আমার কেবল বাম হাত কাজ করে। আমি মনের শক্তি দিয়ে আমার কাজগুলো করছি। মানুষের সেবা করতে গিয়ে সংসার সন্তান সামলাতে পারিনি। প্রতিবন্ধকতা থাকবেই। আমৃত্যু মানুষের সেবা করে যাব যেভাবে আমার স্বামীও শশুর করেছেন।