১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুবর্ণচরে অপহরণের ৯ দিনেও উদ্ধার হয়নি সেই স্কুল ছাত্রী

স্টাফ রিপোর্টার-
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে (১৪) অপহরণের নয় দিন পেরিয়ে গেলেও ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের চরমজিদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

অপহৃত ওই ছাত্রী উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের চরমজিদ গ্রামের মো. গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে। অভিযুক্ত মো. রায়হান (১৮) একই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পূর্ব চরমজিদ গ্রামের আবুল কাশেম কালু ব্যাপারীর ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অপহৃত ছাত্রী স্থানীয় হাবিবিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত মো. রায়হান একই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। রায়হান বিভিন্ন সময় ওই ছাত্রীকে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সময় প্রেম নিবেদনসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখাতো। পরে কৌশলে গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে নেয়।

অপহৃত ছাত্রীর বাবা গিয়াস উদ্দিন বলেন, আজ নয় দিন হয়েছে আমার মেয়েকে আমরা পাই না। এটা নিয়ে আমরা খুব দুশ্চিন্তায় আছি। আমার মেয়ের বয়স ১৪ বছর, অপহরণকারীর বয়স ১৮ বছর। আমার মেয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আর অপহরণকারী দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত ছেলের পরিবার বলছে আমাকে থানা থেকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য। মেয়ে ও ছেলে নাকি আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করেছে।

অভিযুক্ত স্কুলছাত্র রায়হানের বাবা আবুল কাশেম কালু ব্যাপারী বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে আমি রাগ করে কথা বলি না। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তারা বিয়ে করার কথা জানিয়েছে। শুনেছি ছেলে মেয়ে নাকি টুমচর আছে। আমার ছেলের সেদিন ১০৪ ডিগ্রি জ্বর ছিল। কি কারণে তারা এসব করল আমার জানা নাই। থানা থেকে আমাকে বারবার ফোন দিচ্ছে আমি বলেছি তাদের উদ্ধার করে যার যার পরিবারের কাছে তুলে দেওয়ার জন্য।

অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা চরজব্বর থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর থেকে আমরা ওই ছাত্রীকে উদ্ধারের চেষ্টা করছি। দুই পরিবারের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। তারা নাকি বিয়ে করেছে। ফেসবুকে ছবি দিয়েছে।

নোয়াখালী নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সদস্য সচিব জামাল হোসেন বিষাদ বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক দুইজন ছেলে মেয়েকে কীভাবে কোর্টের মাধ্যমে বিয়ে দিল তা খতিয়ে দেখা দরকার। তাদের এখন বয়স কম নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরা নেওয়ার সক্ষমতা হয়নি। আইন পেশায় স্বচ্ছতার যেমন দরকার আছে ঠিক তেমনি যারা এই অন্যায় কাজে জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।

চরজব্বর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে গিয়েছি। অপহৃত স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করি খুব দ্রুত আমরা উদ্ধার করতে পারব।

সর্বাধিক পঠিত

নোবিপ্রবি ছাত্রী হলে অগ্নিকাণ্ড, পরীক্ষা স্থগিত

সুবর্ণচরে অপহরণের ৯ দিনেও উদ্ধার হয়নি সেই স্কুল ছাত্রী

আপডেট: ১০:৫৭:৪১ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ৪ মে ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার-
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে (১৪) অপহরণের নয় দিন পেরিয়ে গেলেও ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের চরমজিদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

অপহৃত ওই ছাত্রী উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের চরমজিদ গ্রামের মো. গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে। অভিযুক্ত মো. রায়হান (১৮) একই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পূর্ব চরমজিদ গ্রামের আবুল কাশেম কালু ব্যাপারীর ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অপহৃত ছাত্রী স্থানীয় হাবিবিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত মো. রায়হান একই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। রায়হান বিভিন্ন সময় ওই ছাত্রীকে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সময় প্রেম নিবেদনসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখাতো। পরে কৌশলে গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে নেয়।

অপহৃত ছাত্রীর বাবা গিয়াস উদ্দিন বলেন, আজ নয় দিন হয়েছে আমার মেয়েকে আমরা পাই না। এটা নিয়ে আমরা খুব দুশ্চিন্তায় আছি। আমার মেয়ের বয়স ১৪ বছর, অপহরণকারীর বয়স ১৮ বছর। আমার মেয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আর অপহরণকারী দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত ছেলের পরিবার বলছে আমাকে থানা থেকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য। মেয়ে ও ছেলে নাকি আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করেছে।

অভিযুক্ত স্কুলছাত্র রায়হানের বাবা আবুল কাশেম কালু ব্যাপারী বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে আমি রাগ করে কথা বলি না। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তারা বিয়ে করার কথা জানিয়েছে। শুনেছি ছেলে মেয়ে নাকি টুমচর আছে। আমার ছেলের সেদিন ১০৪ ডিগ্রি জ্বর ছিল। কি কারণে তারা এসব করল আমার জানা নাই। থানা থেকে আমাকে বারবার ফোন দিচ্ছে আমি বলেছি তাদের উদ্ধার করে যার যার পরিবারের কাছে তুলে দেওয়ার জন্য।

অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা চরজব্বর থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর থেকে আমরা ওই ছাত্রীকে উদ্ধারের চেষ্টা করছি। দুই পরিবারের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। তারা নাকি বিয়ে করেছে। ফেসবুকে ছবি দিয়েছে।

নোয়াখালী নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সদস্য সচিব জামাল হোসেন বিষাদ বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক দুইজন ছেলে মেয়েকে কীভাবে কোর্টের মাধ্যমে বিয়ে দিল তা খতিয়ে দেখা দরকার। তাদের এখন বয়স কম নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরা নেওয়ার সক্ষমতা হয়নি। আইন পেশায় স্বচ্ছতার যেমন দরকার আছে ঠিক তেমনি যারা এই অন্যায় কাজে জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।

চরজব্বর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে গিয়েছি। অপহৃত স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করি খুব দ্রুত আমরা উদ্ধার করতে পারব।