১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২৪ ঘন্টায় ২৮৫ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড বৃষ্টিতে ডুবল নোয়াখালী শহর, দুর্ভোগ চরমে

মোঃ নুর হোসাইন :
চব্বিশ ঘন্টার রেকর্ড বৃষ্টিতে ডুবেছে নোয়াখালী জেলা শহর। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে টানা কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরের বেশ কয়েকটি স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ডুবে গেছে শহররের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, বাসাবাড়িতেও ঢুকছে পানি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ।

শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেল ৪টা দিকে জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক আরজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে আজ শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত জেলা শহর মাইজদীতে ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি গত ২০ বছরের মধ্যে নোয়াখালীতে একদিনের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী নোয়াখালী আরও ২-১দিন হালকা বৃষ্টি হোতে পারে। তবে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা কম।

পর্যন্ত জেলা শহর মাইজদীর বিভিন্ন দপ্তর সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জলাবদ্ধতা কবলিত হয়েছে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচের কক্ষ, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা আবহাওয়া অফিস, জেলা মৎস্য অফিস, প্রেসক্লাব, রেডক্রিসেন্ট, বিআরডিবি, ম্যাটস্, বিদ্যুৎ অফিস, সাব রেজিস্ট্রি অফিসের রেকর্ড কক্ষ, শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম, বন বিভাগের বাংলো, নোয়াখালী সরকারি কলেজ, মাইজদী সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ’সহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি অনেক অফিস।

এদিকে জেলার প্রধান সড়কের একটি অংশ’সহ টাউন হল মোড়, ইসলামিয়া সড়ক, ডিসি সড়ক, মহিলা কলেজ সড়ক, জেল খানা সড়ক, মাইজদী বাজার সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক এখন কয়েক ফুট পানির নিচে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন জীবিকার তাগিদে বের হওয়া শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষ।

স্থানীয়রা বলছেন,পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে এবং পানি নিষ্কাশনের নালাগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় শহরবাসীর এ দুর্ভোগ। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন অনেকে।
দেশের প্রথম শ্রেণির পৌরসভাগুলোর একটি। দীর্ঘদিন ধরে এ শহরে জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়নি। কালেভাদ্রে কয়েকটি ড্রেনের কাজ করা হলেও সেগুলো নিম্নমানের। হালকা বৃষ্টিতেই এসব ড্রেন দিয়ে পানি নামতে অনেক সময় লাগে।

স্থানীয় বাসিন্দা জিল্লুর রহমান জানান, অফিস থেকে হাসপাতাল, বিপণিবিতান থেকে অলিগলি সব জায়গায় পানিতে ডুবু ডুবু অবস্থা। যদিও সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় অফিসমুখী মানুষের ভিড় ছিল না। কিন্তু স্থানীয় মানুষের দুর্ভোগ চরম।

স্থানীয়রা বলছেন, তিন-চার ঘণ্টা বৃষ্টি হলেই প্রায় তলিয়ে যায় নোয়াখালী শহরের অনেক সড়ক। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিল্টন রায় বলেন, সম্প্রতি অতি ভারী বর্ষণে নোয়াখালী শহরে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভা শুক্রবার বিকেল ৪টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সাংবাদিকবৃন্দ সহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের থেকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর নোয়াখালী শহর গড়ার লক্ষ্যে মূল্যবান মতামত গ্রহণ করা হয়।

নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল বলেন, টানা বৃষ্টিতে অনেক জায়গায় পানি উঠে মানুষজন কষ্টে আছে, আমরা তাদের কষ্ট লাগবের চেষ্টা করছি৷ পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা পানি নিষ্কাশনে কাজ করে যাচ্ছেন।

সর্বাধিক পঠিত

নোবিপ্রবি ছাত্রী হলে অগ্নিকাণ্ড, পরীক্ষা স্থগিত

২৪ ঘন্টায় ২৮৫ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড বৃষ্টিতে ডুবল নোয়াখালী শহর, দুর্ভোগ চরমে

আপডেট: ১০:১২:১৭ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ২ আগস্ট ২০২৪

মোঃ নুর হোসাইন :
চব্বিশ ঘন্টার রেকর্ড বৃষ্টিতে ডুবেছে নোয়াখালী জেলা শহর। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে টানা কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরের বেশ কয়েকটি স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ডুবে গেছে শহররের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, বাসাবাড়িতেও ঢুকছে পানি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ।

শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেল ৪টা দিকে জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক আরজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে আজ শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত জেলা শহর মাইজদীতে ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি গত ২০ বছরের মধ্যে নোয়াখালীতে একদিনের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী নোয়াখালী আরও ২-১দিন হালকা বৃষ্টি হোতে পারে। তবে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা কম।

পর্যন্ত জেলা শহর মাইজদীর বিভিন্ন দপ্তর সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জলাবদ্ধতা কবলিত হয়েছে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচের কক্ষ, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা আবহাওয়া অফিস, জেলা মৎস্য অফিস, প্রেসক্লাব, রেডক্রিসেন্ট, বিআরডিবি, ম্যাটস্, বিদ্যুৎ অফিস, সাব রেজিস্ট্রি অফিসের রেকর্ড কক্ষ, শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম, বন বিভাগের বাংলো, নোয়াখালী সরকারি কলেজ, মাইজদী সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ’সহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি অনেক অফিস।

এদিকে জেলার প্রধান সড়কের একটি অংশ’সহ টাউন হল মোড়, ইসলামিয়া সড়ক, ডিসি সড়ক, মহিলা কলেজ সড়ক, জেল খানা সড়ক, মাইজদী বাজার সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক এখন কয়েক ফুট পানির নিচে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন জীবিকার তাগিদে বের হওয়া শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষ।

স্থানীয়রা বলছেন,পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে এবং পানি নিষ্কাশনের নালাগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় শহরবাসীর এ দুর্ভোগ। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন অনেকে।
দেশের প্রথম শ্রেণির পৌরসভাগুলোর একটি। দীর্ঘদিন ধরে এ শহরে জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়নি। কালেভাদ্রে কয়েকটি ড্রেনের কাজ করা হলেও সেগুলো নিম্নমানের। হালকা বৃষ্টিতেই এসব ড্রেন দিয়ে পানি নামতে অনেক সময় লাগে।

স্থানীয় বাসিন্দা জিল্লুর রহমান জানান, অফিস থেকে হাসপাতাল, বিপণিবিতান থেকে অলিগলি সব জায়গায় পানিতে ডুবু ডুবু অবস্থা। যদিও সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় অফিসমুখী মানুষের ভিড় ছিল না। কিন্তু স্থানীয় মানুষের দুর্ভোগ চরম।

স্থানীয়রা বলছেন, তিন-চার ঘণ্টা বৃষ্টি হলেই প্রায় তলিয়ে যায় নোয়াখালী শহরের অনেক সড়ক। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিল্টন রায় বলেন, সম্প্রতি অতি ভারী বর্ষণে নোয়াখালী শহরে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভা শুক্রবার বিকেল ৪টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সাংবাদিকবৃন্দ সহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের থেকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর নোয়াখালী শহর গড়ার লক্ষ্যে মূল্যবান মতামত গ্রহণ করা হয়।

নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল বলেন, টানা বৃষ্টিতে অনেক জায়গায় পানি উঠে মানুষজন কষ্টে আছে, আমরা তাদের কষ্ট লাগবের চেষ্টা করছি৷ পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা পানি নিষ্কাশনে কাজ করে যাচ্ছেন।