১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোয়াখালীতে পুলিশি হেফাজতে এক আইনজীবীকে নির্যাতনের অভিযোগে সাত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার:
নোয়াখালী সুধারাম মডেল থানায় পুলিশি হেফাজতে এক আইনজীবীকে নির্যাতনের অভিযোগে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক ও পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠানসহ সাত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে পিটিশন মামলা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের বিএনপিপন্থী আইনজীবী হিসেবে পরিচিত মিনারুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই মামলা করেন।
আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রাথমিক অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী গুলজার হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক, পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠান, উপপরিদর্শক (এসআই) অপু বড়ুয়া, এসআই কামাল হোসেন, কনস্টেবল মো. রাশেল, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবু তালেব, মুন্সি রুবেল বড়ুয়া।

মামলা সুত্রে জানা যায়,চলতি বছর সুধারাম থানায় সাত বছরের একটি কন্যাশিশুকে মামলার অভিযোগের আসামি করা হয়। শিশুটিকে জামিন এবং মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে নোয়াখালী শিশু আদালতে আবেদন করেন আইনজীবী মিনারুল ইসলাম। আদালত তাঁর আবেদন আমলে নিয়ে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হককে তিরস্কার করেন। এ ঘটনায় মিনারুলের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন ওসি। মামলার বাদী আইনজীবী মিনারুল ইসলাম অভিযোগ করেন, গত ১৯ জুলাই আবদুল করিম নামের এক বিএনপির নেতাকে দেখতে সুধারাম থানায় যান মিনারুল ইসলাম। তখন ওসি জাহেদুল হক তাঁকে আটকে রাখেন এবং পরদিন একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠান। আটকের পর আনুমানিক রাত ১২টার দিকে থানার দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে পুলিশ সদস্যরা তাঁকে মারধর করে মারাত্মকভাবে আহত করেন। খবর পেয়ে তাঁর আত্মীয়-স্বজন থানায় দেখা করতে গেলে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে উপপরিদর্শক (এসআই) অপু বড়ুয়া ও কামাল হোসেন তাঁদের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় ছাত্র আন্দোলনের মামলায় চালান দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। টাকা না দেওয়ায় তাঁকে ২০ জুলাই বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। এ সময় তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া হবে না শর্তে তাঁর আত্মীয়ের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) কামাল হোসেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী মিনারুল ইসলামের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মনগড়া বলে উল্লেখ করেন (ওসি) মীর জাহেদুল হক ও পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠান। গণমাধ্যমকে তাঁরা বলেন, ওই আইনজীবীকে পুলিশের ওপর হামলার একটি মামলার আসামি হিসেবে আটক করা হয়েছিল। থানায় তাঁর সঙ্গে কোনো পুলিশ কোনো দুর্ব্যবহার করেনও। সম্পূর্ণ সুস্থভাবে তখন তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়েছিলো।

উল্লেখ্য যে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে আন্দোলনকারীদের উপর কোন ধরনের পুলিশি হামলার ঘটনা ঘটেনি। জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান এবং সুধারাম মডেল থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি সমন্বয়কদের সাথে আলোচনা করে আন্দোলনকে শান্তিপূর্ণ রাখতে এবং সার্বিক নিরাপত্তা দিতে কাজ করেছে৷

সর্বাধিক পঠিত

নোবিপ্রবি ছাত্রী হলে অগ্নিকাণ্ড, পরীক্ষা স্থগিত

নোয়াখালীতে পুলিশি হেফাজতে এক আইনজীবীকে নির্যাতনের অভিযোগে সাত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট: ০৯:৪৬:৪৭ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৫ আগস্ট ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার:
নোয়াখালী সুধারাম মডেল থানায় পুলিশি হেফাজতে এক আইনজীবীকে নির্যাতনের অভিযোগে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক ও পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠানসহ সাত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে পিটিশন মামলা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের বিএনপিপন্থী আইনজীবী হিসেবে পরিচিত মিনারুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই মামলা করেন।
আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রাথমিক অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী গুলজার হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক, পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠান, উপপরিদর্শক (এসআই) অপু বড়ুয়া, এসআই কামাল হোসেন, কনস্টেবল মো. রাশেল, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবু তালেব, মুন্সি রুবেল বড়ুয়া।

মামলা সুত্রে জানা যায়,চলতি বছর সুধারাম থানায় সাত বছরের একটি কন্যাশিশুকে মামলার অভিযোগের আসামি করা হয়। শিশুটিকে জামিন এবং মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে নোয়াখালী শিশু আদালতে আবেদন করেন আইনজীবী মিনারুল ইসলাম। আদালত তাঁর আবেদন আমলে নিয়ে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হককে তিরস্কার করেন। এ ঘটনায় মিনারুলের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন ওসি। মামলার বাদী আইনজীবী মিনারুল ইসলাম অভিযোগ করেন, গত ১৯ জুলাই আবদুল করিম নামের এক বিএনপির নেতাকে দেখতে সুধারাম থানায় যান মিনারুল ইসলাম। তখন ওসি জাহেদুল হক তাঁকে আটকে রাখেন এবং পরদিন একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠান। আটকের পর আনুমানিক রাত ১২টার দিকে থানার দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে পুলিশ সদস্যরা তাঁকে মারধর করে মারাত্মকভাবে আহত করেন। খবর পেয়ে তাঁর আত্মীয়-স্বজন থানায় দেখা করতে গেলে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে উপপরিদর্শক (এসআই) অপু বড়ুয়া ও কামাল হোসেন তাঁদের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় ছাত্র আন্দোলনের মামলায় চালান দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। টাকা না দেওয়ায় তাঁকে ২০ জুলাই বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। এ সময় তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া হবে না শর্তে তাঁর আত্মীয়ের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) কামাল হোসেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী মিনারুল ইসলামের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মনগড়া বলে উল্লেখ করেন (ওসি) মীর জাহেদুল হক ও পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠান। গণমাধ্যমকে তাঁরা বলেন, ওই আইনজীবীকে পুলিশের ওপর হামলার একটি মামলার আসামি হিসেবে আটক করা হয়েছিল। থানায় তাঁর সঙ্গে কোনো পুলিশ কোনো দুর্ব্যবহার করেনও। সম্পূর্ণ সুস্থভাবে তখন তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়েছিলো।

উল্লেখ্য যে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে আন্দোলনকারীদের উপর কোন ধরনের পুলিশি হামলার ঘটনা ঘটেনি। জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান এবং সুধারাম মডেল থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি সমন্বয়কদের সাথে আলোচনা করে আন্দোলনকে শান্তিপূর্ণ রাখতে এবং সার্বিক নিরাপত্তা দিতে কাজ করেছে৷