মোঃ নুর হোসাইন :
ছাত্র ঐক্যের আড়ালে নোবিপ্রবিতে নোবিপ্রবিতে ছাত্রলীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
আজ ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, (রোজ বৃহস্পতিবার) ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ নোবিপ্রবি শাখার সভাপতি মো: খলিল মাহমুদের সভাপতিত্বে ক্যাম্পাসে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির শূরা সদস্য এবং নোবিপ্রবি শাখার সাবেক সভাপতি এস এম রাসেল। প্রধান অতিথি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, “ছাত্র ঐক্য সংসদের আড়ালে স্বৈরাচারের দোসর ছাত্রলীগকে পূনর্বাসনের পায়তারা চলছে।” তিনি জানান, গত ০৩ সেপ্টেম্বর ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি বন্যার্ত অঞ্চল পরিদর্শনের জন্য এলে নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে যাত্র বিরতি করেন এবং দায়িত্বশীলদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এই সময় তিনি কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি বা সভা-সমাবেশ করেননি। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে একদল কুচক্রি মহল সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে বিভ্রান্ত করে ক্যাম্পাসে গভীর রাতে অস্থীতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে। তিনি সচেতন সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে এই সাধারণ শিক্ষার্থীর বেশধারী কুচক্রি মহলের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রূখে দাঁড়ানোর আহবান জানান।
তিনি বৈষম্যবিরোধি ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের উদ্দেশ্যে কতিপয় প্রশ্ন তুলে ধরেন: ১. ক্যাম্পাসে গভীর রাতে অনুমোদনহীন ছাত্র সংগঠনের ব্যানারে যে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে এটাতে তাদেরকে অবহিত করা হয়েছে কিনা? বা এই বিষয়ে তারা সম্যক অবগত কিনা? ২. ক্যাম্পাসে বৈষম্যবিরোধি শক্তিশালী প্লাটফর্ম থাকার পরেও অবৈধ এবং স্বৈরাচারের দোসর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা কিভাবে ক্যাম্পাসে গভীর রাতে বিক্ষোভ মিছিল করার সাহস পায়? এর প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধি ছাত্র আন্দোলন নোবিপ্রবির ভূমিকা কি ছিল? ৩. আমরা জানি নোয়াখালীতে বৈষম্যবিরোধি ছাত্র আন্দোলনের প্রায় ১১ জন সমন্বয়ক ছিল। তার মধ্যে একজন হচ্ছে জাহিদুল ইসলাম হাসান, যে এখন স্বৈরাচারী ছাত্র ঐক্য সংসদের নেতৃত্ব দিচ্ছে। ঐখানে জাহিদুল সহ ২জনকে দেখতে পারছি আমরা। তাহলে বাকিদের অবস্থান কী? এই সমন্বয়কদের ব্যাপারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে আপনাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট পাঁচ (০৫) দফা দাবি তুলে দরা হয়। ১. নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতিকে নিষিদ্ধ মর্মে কোনো অফিশিয়াল রেজুলেশন বা আইন প্রণয়ন হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট করতে হবে। ২. মধ্যরাতের এই বিক্ষোভ করার জন্য তারা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে কি না, তা স্পষ্ট করতে হবে। ৩. ক্যাম্পাসে বর্তমান স্বৈরাচার দোষর মুক্ত শক্তিশালী প্রশাসন থাকার পরও কিভাবে অবৈধ, অনুমোদনহীন সংগঠন গভীর রাতে ক্যাম্পাসে শহীদ মিনারে ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসলীগদের নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং প্রশাসনিক ভবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় তালা দেওয়ার হুমকির মতো দুঃসাহস করে? তাদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণসহ এই অবৈধ অনুমোদনহীন সংগঠন বিলুপ্তি ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে এটা নোবিপ্রবি সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাণের দাবি। ৪. ক্যাম্পাসে বর্তমান ক্লাবগুলোর কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে স্বৈরাচারের দোসর ছাত্রলীগ মুক্ত ক্লাব নিশ্চিত করতে হবে। ৫. তারা আমাদেরকে বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিচ্ছে, এর জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং রাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা চাই। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে সর্বশেষ বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৮ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের সকল নাগরিকের সংগঠন করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে ক্যাম্পাসে রাজনীতিকে আমরা প্রমোট করতে পারি না। এমনকি নোবিপ্রবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদি রেজুলেশন বা আইনের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয় এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা যদি চায় তাহলে আমরা ক্যাম্পাসে রাজনীতি করবো না। এক্ষেত্রে অন্যান্য ছাত্র সংগঠনও রাজনীতি করতে পারবে না।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন নোবিপ্রবি শাখার দায়িত্বশীলবৃন্দ।