১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি, আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেই, এখনো পানি বন্ধি ২০ লাখ মানুষ

মোঃ নুর হোসাইন :
নোয়াখালীতে টা না বৃষ্টি ও উজানের পানিতে সৃষ্টি হওয়া ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বেশিরভাগ থানায় এক থেকে দুই ইঞ্চি পরিমাণ পানি কমেছে। তবে এখনো জেলার ৮টি উপজেলার ৮৭টি ইউনিয়নের ২০লাখ ১৮হাজার ৫শত মানুষ পানি বন্ধি রয়েছে। ১৩৬৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২লাখ ৯০হাজার ৫১৩জন মানুষ আশ্রিত রয়েছে। এখন নতুন করে অনেকের ঘরবাড়ি বন্যায় বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ।ফলে আরো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র মুখি হচ্ছেন। তবে কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে কথা বলে জানা গেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে নুতন করে মানুষ উঠার জায়গা নেই। তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) জেলা শহর মাইজদীসহ প্রায় সব উপজেলায় রোদ উঠেছে এবং বৃষ্টিপাত বন্ধ ছিলো। ফলে সদর উপজেলা সহ অন্যান্য উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অপরদিকে, জেলার দুর্গম অনেক এলাকায় ঠিকমতো ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না বলে জানান বাসিন্দারা। ত্রাণ পেতে হাহাকার করছে বন্যার্তরা।

বেগমগঞ্জের বাসিন্দা আবুল হাসান বলেন, গ্রামের মানুষ পানি বন্দি হয়ে বেশি কষ্টে আছে। কিন্ত চলাচলের পথ দুর্গম হওয়ায় আমরা ত্রাণ পাচ্ছিনা। প্রশাসনের সঙ্গে ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত ত্রাণ কার্যক্রমের সমন্বয় না থাকায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে।

কবিরহাটের কালামুন্সি বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা শহিদ মিয়া বলেন, এই আশ্রয়েকেন্দ্রে ছোট একটি কক্ষে ৬টি পরিবার গাদাগাদি করে থাকেছে। এর মধ্যে অনেকে নতুন করে আসছে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার জন্য। কিন্তু থাকার জায়গার অভাবে উঠতে পারছেনা।

এদিকে, এই পর্যন্ত জেলায় বন্যায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি ১২৪টি ও বেসরাকারি ১৬টি মেডিকেল টিম মাঠে চালু রয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলার পানিবন্দি মানুষের মধ্যে সরকারিভাবে নগদ ৪৫ লাখ টাকা, ৫৯৩ টন চাল, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৫ লাখ টাকার শিশু খাদ্য ও ৫ লাখ টাকার পশুখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন কাজ করছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালীর অন্যতম সমন্বয়ক আরিফুল ইসলাম বলেন, নোয়াখালীতে বন্যায় কয়েক লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছাতে পারছেনা।আমাদের সমন্বয়ক ও ছাত্র ভাইয়েরা জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে দিনরাত বন্যার্ত মানুষের কাছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানি পৌঁছাতে কাজ করে যাচ্ছে ।এবং সাধারণ ছাত্র সমাজের ব্যানারে জেলা স্কুলের সামনে বুথ খুলে গণত্রাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে ।

সর্বাধিক পঠিত

নোবিপ্রবি ছাত্রী হলে অগ্নিকাণ্ড, পরীক্ষা স্থগিত

নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি, আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেই, এখনো পানি বন্ধি ২০ লাখ মানুষ

আপডেট: ১১:২৩:৩৩ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ৩০ আগস্ট ২০২৪

মোঃ নুর হোসাইন :
নোয়াখালীতে টা না বৃষ্টি ও উজানের পানিতে সৃষ্টি হওয়া ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বেশিরভাগ থানায় এক থেকে দুই ইঞ্চি পরিমাণ পানি কমেছে। তবে এখনো জেলার ৮টি উপজেলার ৮৭টি ইউনিয়নের ২০লাখ ১৮হাজার ৫শত মানুষ পানি বন্ধি রয়েছে। ১৩৬৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২লাখ ৯০হাজার ৫১৩জন মানুষ আশ্রিত রয়েছে। এখন নতুন করে অনেকের ঘরবাড়ি বন্যায় বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ।ফলে আরো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র মুখি হচ্ছেন। তবে কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে কথা বলে জানা গেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে নুতন করে মানুষ উঠার জায়গা নেই। তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) জেলা শহর মাইজদীসহ প্রায় সব উপজেলায় রোদ উঠেছে এবং বৃষ্টিপাত বন্ধ ছিলো। ফলে সদর উপজেলা সহ অন্যান্য উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অপরদিকে, জেলার দুর্গম অনেক এলাকায় ঠিকমতো ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না বলে জানান বাসিন্দারা। ত্রাণ পেতে হাহাকার করছে বন্যার্তরা।

বেগমগঞ্জের বাসিন্দা আবুল হাসান বলেন, গ্রামের মানুষ পানি বন্দি হয়ে বেশি কষ্টে আছে। কিন্ত চলাচলের পথ দুর্গম হওয়ায় আমরা ত্রাণ পাচ্ছিনা। প্রশাসনের সঙ্গে ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত ত্রাণ কার্যক্রমের সমন্বয় না থাকায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে।

কবিরহাটের কালামুন্সি বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা শহিদ মিয়া বলেন, এই আশ্রয়েকেন্দ্রে ছোট একটি কক্ষে ৬টি পরিবার গাদাগাদি করে থাকেছে। এর মধ্যে অনেকে নতুন করে আসছে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার জন্য। কিন্তু থাকার জায়গার অভাবে উঠতে পারছেনা।

এদিকে, এই পর্যন্ত জেলায় বন্যায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি ১২৪টি ও বেসরাকারি ১৬টি মেডিকেল টিম মাঠে চালু রয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলার পানিবন্দি মানুষের মধ্যে সরকারিভাবে নগদ ৪৫ লাখ টাকা, ৫৯৩ টন চাল, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৫ লাখ টাকার শিশু খাদ্য ও ৫ লাখ টাকার পশুখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন কাজ করছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালীর অন্যতম সমন্বয়ক আরিফুল ইসলাম বলেন, নোয়াখালীতে বন্যায় কয়েক লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছাতে পারছেনা।আমাদের সমন্বয়ক ও ছাত্র ভাইয়েরা জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে দিনরাত বন্যার্ত মানুষের কাছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানি পৌঁছাতে কাজ করে যাচ্ছে ।এবং সাধারণ ছাত্র সমাজের ব্যানারে জেলা স্কুলের সামনে বুথ খুলে গণত্রাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে ।