১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোয়াখালীতে ২০১৮ সালের ভোটের রাতে দলবদ্ধ ধর্ষণের সেই ঘটনার রায় আগামীকাল

স্টাফ রির্পোটার-
পাঁচ বছর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে দলবদ্ধ ধর্ষণের আলোচিত ঘটনার মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামীকাল মঙ্গলবার। নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২–এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস মামলাটির রায় ঘোষণা করবেন। এর আগে গত ২৯ নভেম্বর অধিকতর যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন বিচারক।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে (৪০) মারধর ও দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। নির্যাতনের শিকার নারী চার সন্তানের জননী। তাঁর অভিযোগ ছিল, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ার জেরে ওই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি তখন দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়।
ওই ঘটনার পরদিন নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
রায় ঘোষণার এক দিন আগে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নির্যাতনের শিকার ওই নারীর বাড়ির সামনে দুটি মোটরসাইকেলে অজ্ঞাতনামা তিন থেকে চারজন ব্যক্তি ঘোরাফেরা করেছেন। এতে ওই নারী ও তাঁর সন্তানেরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ওই নারী আজ সোমবার সকালে জানান সন্ধ্যার পর অচেনা ব্যক্তিদের বাড়ির পাশে ঘোরাফেরা করতে দেখে তিনি তাৎক্ষণিক বিষয়টি স্থানীয় চর জুবলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও চর জব্বর থানায় অবহিত করেছেন।
রায়ের তারিখ ঘোষণা হওয়া প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার নারী বলেন, রায় ঘোষণা উপলক্ষে তিনি আদালতে যাবেন। তাঁর ওপর সেই রাতে যে নির্যাতন চালানো হয়েছে, তা তিনি এক মুহূর্তের জন্যও ভুলতে পারছেন না। তিনি সেই নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বলেন, ‘আদালতের কাছে আমি ন্যায়বিচার চাই। এ ছাড়া আমার চাওয়ার কিছু নাই।’
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি সালেহ আহমদ সোহেল খান জানান, আলোচিত ওই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছে। মামলায় রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একজন আসামি মো. মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮) ঘটনার পর থেকে পলাতক।
আদালতে বাদীপক্ষের আইনজীবী ও জেলা বারের সাবেক সভাপতি মোল্লা হাবিবুর রছুল বলেন, সুবর্ণচরে নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের সেই আলোচিত ঘটনায় কারাগারে থাকা ১৫ জন আসামির মধ্যে কমপক্ষে ৮ জন আসামি নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কাল মামলাটির রায় ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে।

সর্বাধিক পঠিত

নোবিপ্রবি ছাত্রী হলে অগ্নিকাণ্ড, পরীক্ষা স্থগিত

নোয়াখালীতে ২০১৮ সালের ভোটের রাতে দলবদ্ধ ধর্ষণের সেই ঘটনার রায় আগামীকাল

আপডেট: ০২:২৭:৪১ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৪

স্টাফ রির্পোটার-
পাঁচ বছর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে দলবদ্ধ ধর্ষণের আলোচিত ঘটনার মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামীকাল মঙ্গলবার। নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২–এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস মামলাটির রায় ঘোষণা করবেন। এর আগে গত ২৯ নভেম্বর অধিকতর যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন বিচারক।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে (৪০) মারধর ও দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। নির্যাতনের শিকার নারী চার সন্তানের জননী। তাঁর অভিযোগ ছিল, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ার জেরে ওই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি তখন দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়।
ওই ঘটনার পরদিন নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
রায় ঘোষণার এক দিন আগে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নির্যাতনের শিকার ওই নারীর বাড়ির সামনে দুটি মোটরসাইকেলে অজ্ঞাতনামা তিন থেকে চারজন ব্যক্তি ঘোরাফেরা করেছেন। এতে ওই নারী ও তাঁর সন্তানেরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ওই নারী আজ সোমবার সকালে জানান সন্ধ্যার পর অচেনা ব্যক্তিদের বাড়ির পাশে ঘোরাফেরা করতে দেখে তিনি তাৎক্ষণিক বিষয়টি স্থানীয় চর জুবলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও চর জব্বর থানায় অবহিত করেছেন।
রায়ের তারিখ ঘোষণা হওয়া প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার নারী বলেন, রায় ঘোষণা উপলক্ষে তিনি আদালতে যাবেন। তাঁর ওপর সেই রাতে যে নির্যাতন চালানো হয়েছে, তা তিনি এক মুহূর্তের জন্যও ভুলতে পারছেন না। তিনি সেই নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বলেন, ‘আদালতের কাছে আমি ন্যায়বিচার চাই। এ ছাড়া আমার চাওয়ার কিছু নাই।’
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি সালেহ আহমদ সোহেল খান জানান, আলোচিত ওই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছে। মামলায় রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একজন আসামি মো. মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮) ঘটনার পর থেকে পলাতক।
আদালতে বাদীপক্ষের আইনজীবী ও জেলা বারের সাবেক সভাপতি মোল্লা হাবিবুর রছুল বলেন, সুবর্ণচরে নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের সেই আলোচিত ঘটনায় কারাগারে থাকা ১৫ জন আসামির মধ্যে কমপক্ষে ৮ জন আসামি নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কাল মামলাটির রায় ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে।