১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ কাগজপত্র মিললে দেশে ফিরে বিয়ে করার কথা, ফিরলেন কফিনবন্দি হয়ে

  • আপডেট: ০৯:৫১:৩৪ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৪
  • ১৭১৫

স্টাফ রির্পোটার-
ভাগ্য বদলের আশায় ৫ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন মো. মামুনুর রশিদ মামুন (৩৩)। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ফিরতে পারেননি দেশে। তাই কাগজপত্র মিললে দেশে ফিরে বিয়ে করার কথা ছিল তার। অবশেষে দেশে ফিরেছেন মামুন তবে বিয়ে করতে নয়, কফিনবন্দি হয়ে। অশ্রæসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় দিলেন সবাই।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় মামুনের মরদেহ। এ সময় একনজর দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় জমান প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনেরা।

মৃত মো. মামুনুর রশিদ সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের পদিপাড়া গ্রামের হাসমত উল্যাহ হাজী বাড়ির শফি উল্যাহর ছেলে। তিন ভাই, চার বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন মামুন। তিনি ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।

জানা গেছে, গত ১৬ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ায় উবারে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে নিউইয়র্কে ফেরার পথে স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়েন মামুন। এরপর তার সহকর্মীরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে তার মরদেহ নিজ গ্রামে এলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এক নজর মরদেহ দেখার জন্য আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও এলাকার শত শত নারী-পুরুষ ভিড় করেন।

জানাজায় অংশ নেওয়া মৃত মামুনের ছোট ভাই রিয়াদ খান বলেন, আমার ভাই বহু বছর পর আমাদের বাড়িতে এসেছে। কিন্তু এমন আসা আমরা কখনো কল্পনাও করিনি। আমার ভাই আমার সঙ্গে কথা বলছে না। আমরা সবাই মিলে তাকে কবরস্থানে রেখে এসেছি। কষ্টে আমাদের বুকটা ফেটে যাচ্ছে। আমার ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন প্লিজ।

নিহতের বাবা শফি উল্যাহ বলেন, আমি আমার সন্তানকে দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। তিন ভাই, চার বোনের মধ্যে মামুন সবার বড়। সে উবারে যাত্রী আনা নেওয়া করতো। বৈধ কাগজপত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি আসার কথা ছিল। আমাদের সব শেষ হয়ে গেল। আপনারা আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত মামুনের সহকর্মী সোহাগ হোসেন বলেন, মামুন যাত্রী নামিয়ে ফেরার পথে বমি করে। আমরা তাৎক্ষণিক তাকে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সামনের আগস্ট মাসে তার কাগজপত্র পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাগজপত্র পাওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়।

আমিশাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সেলিম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে কফিনবন্দি হয়ে ফিরলেন মামুন। সংসারের হাল ধরতে সে বিদেশ পাড়ি দিয়েছে। তবে ভাগ্য তার সহায় হয়নি। তাকে অশ্রæসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় দিয়েছে সবাই।

সর্বাধিক পঠিত

নোবিপ্রবি ছাত্রী হলে অগ্নিকাণ্ড, পরীক্ষা স্থগিত

যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ কাগজপত্র মিললে দেশে ফিরে বিয়ে করার কথা, ফিরলেন কফিনবন্দি হয়ে

আপডেট: ০৯:৫১:৩৪ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৪

স্টাফ রির্পোটার-
ভাগ্য বদলের আশায় ৫ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন মো. মামুনুর রশিদ মামুন (৩৩)। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ফিরতে পারেননি দেশে। তাই কাগজপত্র মিললে দেশে ফিরে বিয়ে করার কথা ছিল তার। অবশেষে দেশে ফিরেছেন মামুন তবে বিয়ে করতে নয়, কফিনবন্দি হয়ে। অশ্রæসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় দিলেন সবাই।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় মামুনের মরদেহ। এ সময় একনজর দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় জমান প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনেরা।

মৃত মো. মামুনুর রশিদ সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের পদিপাড়া গ্রামের হাসমত উল্যাহ হাজী বাড়ির শফি উল্যাহর ছেলে। তিন ভাই, চার বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন মামুন। তিনি ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।

জানা গেছে, গত ১৬ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ায় উবারে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে নিউইয়র্কে ফেরার পথে স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়েন মামুন। এরপর তার সহকর্মীরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে তার মরদেহ নিজ গ্রামে এলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এক নজর মরদেহ দেখার জন্য আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও এলাকার শত শত নারী-পুরুষ ভিড় করেন।

জানাজায় অংশ নেওয়া মৃত মামুনের ছোট ভাই রিয়াদ খান বলেন, আমার ভাই বহু বছর পর আমাদের বাড়িতে এসেছে। কিন্তু এমন আসা আমরা কখনো কল্পনাও করিনি। আমার ভাই আমার সঙ্গে কথা বলছে না। আমরা সবাই মিলে তাকে কবরস্থানে রেখে এসেছি। কষ্টে আমাদের বুকটা ফেটে যাচ্ছে। আমার ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন প্লিজ।

নিহতের বাবা শফি উল্যাহ বলেন, আমি আমার সন্তানকে দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। তিন ভাই, চার বোনের মধ্যে মামুন সবার বড়। সে উবারে যাত্রী আনা নেওয়া করতো। বৈধ কাগজপত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি আসার কথা ছিল। আমাদের সব শেষ হয়ে গেল। আপনারা আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত মামুনের সহকর্মী সোহাগ হোসেন বলেন, মামুন যাত্রী নামিয়ে ফেরার পথে বমি করে। আমরা তাৎক্ষণিক তাকে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সামনের আগস্ট মাসে তার কাগজপত্র পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাগজপত্র পাওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়।

আমিশাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সেলিম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে কফিনবন্দি হয়ে ফিরলেন মামুন। সংসারের হাল ধরতে সে বিদেশ পাড়ি দিয়েছে। তবে ভাগ্য তার সহায় হয়নি। তাকে অশ্রæসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় দিয়েছে সবাই।