১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অভিযোগের তীর ইউপি চেয়াম্যানের বিরুদ্ধে মারা গেছেন অভিযোগে বয়স্ক ভাতা বন্ধ

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট: ০৯:২৮:১৪ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২৪
  • ১৩৬৭

মোঃ নুর হোসাইন-
৯১ বছর বয়সী বৃদ্ধা সামছুন নাহার। তিনি প্রায় ২৫ বছর ধরে বয়স্ক ভাতা পেয়ে আসছিলেন। তবে হঠাৎ করে গত বছরের মার্চে বন্ধ হয়ে যায় ভাতা। এরপর দীর্ঘদিন ধরে ভাতা না পেয়ে তিনি তার ছেলেকে ইউনিয়ন পরিষদে পাঠান খোঁজ নিতে। তিনি গিয়ে জানতে পারেন ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মারা গেছেন তার মা সামছুন নাহার। তাই তার নাম কেটে দিয়ে অন্য একজনকে ভাতার কার্ড করে দেওয়া হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আমান উল্যাপুর ইউনিয়নে। ভুক্তভোগী সামছুন নাহার ওই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মৃত আবদুল খালেকের স্ত্রী।

আমান উল্যাহপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের স্বাক্ষরিত একটি মৃত্যু সনদে দেখা যায়, ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মারা যান বৃদ্ধা সামছুন নাহার। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এমন একটি সনদ দেওয়ায় তার ভাতাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। অথচ বৃদ্ধা নিজেই জানেন না তিনি যে এক বছর আগে মারা গেছেন।

ভুক্তভোগী সামছুন নাহার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে গেলে আমার ছেলেকে সবাই বলে আমি নাকি মারা গেছি। আমাকে ভাতা দেওয়া হবে না। আমি জীবিত থাকার পরও আমাকে মৃত দেখিয়ে আরেকজনের নামে কীভাবে ভাতার টাকা পরিবর্তন করে দেয়! আমি গরিব মানুষ। আমি এর বিচার চাই।

সামছুন নাহারের প্রতিবেশী আমিন উল্যা বলেন, এ রকম ঘটনা তদন্ত করলে আরও অনেক পাওয়া যাবে। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় এবং ইউনিয়ন পরিষদের কতিপয় ব্যক্তি এ ধরনের অবৈধ কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত। এদের টাকা না দিলে বিধবা, বয়স্কভাতা হয় না। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, আমি ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। বৃদ্ধা ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সম্ভবত তিনি লাইভ ভেরিফিকেশনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে আসেননি তাই তাকে মৃত দেখানো হয়েছে। আমি সাক্ষর করেছি এটা সত্য তবে, এটা উদ্দেশ্য
প্রণোদিতভাবে নয়। লাইভ ভ্যারিফিকেশনে না আসা সব ভাতাভোগীদের পরিষদের রেজুলেশনে ভাতা বন্ধ করা হয়।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাছরুল্যাহ আল মাহমুদ বলেন, প্যানেল চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যায়নপত্র ও পরিষদের রেজুলেশনের ভিত্তিতে জানতে পারি, তিনি ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ এ মৃত্যুবরণ করেন। তাই ভাতাটি বন্ধ করা হয়েছে। কোনো মানুষ মারা গেলে আমরা সকল কাগজপত্র দেখে অন্য একজনকে প্রতিস্থাপন করি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিনুল হাসান বলেন, এটি সংশোধনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আশা করি সামছুন নাহার দ্রুতই বয়স্ক ভাতা পাবেন। এ ছাড়া আমরা তদন্ত করছি কে বা কারা এটার সঙ্গে জড়িত। যদি তদন্তের পর কেউ দোষী সাব্যস্ত হয় তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বাধিক পঠিত

নোবিপ্রবি ছাত্রী হলে অগ্নিকাণ্ড, পরীক্ষা স্থগিত

অভিযোগের তীর ইউপি চেয়াম্যানের বিরুদ্ধে মারা গেছেন অভিযোগে বয়স্ক ভাতা বন্ধ

আপডেট: ০৯:২৮:১৪ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২৪

মোঃ নুর হোসাইন-
৯১ বছর বয়সী বৃদ্ধা সামছুন নাহার। তিনি প্রায় ২৫ বছর ধরে বয়স্ক ভাতা পেয়ে আসছিলেন। তবে হঠাৎ করে গত বছরের মার্চে বন্ধ হয়ে যায় ভাতা। এরপর দীর্ঘদিন ধরে ভাতা না পেয়ে তিনি তার ছেলেকে ইউনিয়ন পরিষদে পাঠান খোঁজ নিতে। তিনি গিয়ে জানতে পারেন ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মারা গেছেন তার মা সামছুন নাহার। তাই তার নাম কেটে দিয়ে অন্য একজনকে ভাতার কার্ড করে দেওয়া হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আমান উল্যাপুর ইউনিয়নে। ভুক্তভোগী সামছুন নাহার ওই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মৃত আবদুল খালেকের স্ত্রী।

আমান উল্যাহপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের স্বাক্ষরিত একটি মৃত্যু সনদে দেখা যায়, ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মারা যান বৃদ্ধা সামছুন নাহার। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এমন একটি সনদ দেওয়ায় তার ভাতাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। অথচ বৃদ্ধা নিজেই জানেন না তিনি যে এক বছর আগে মারা গেছেন।

ভুক্তভোগী সামছুন নাহার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে গেলে আমার ছেলেকে সবাই বলে আমি নাকি মারা গেছি। আমাকে ভাতা দেওয়া হবে না। আমি জীবিত থাকার পরও আমাকে মৃত দেখিয়ে আরেকজনের নামে কীভাবে ভাতার টাকা পরিবর্তন করে দেয়! আমি গরিব মানুষ। আমি এর বিচার চাই।

সামছুন নাহারের প্রতিবেশী আমিন উল্যা বলেন, এ রকম ঘটনা তদন্ত করলে আরও অনেক পাওয়া যাবে। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় এবং ইউনিয়ন পরিষদের কতিপয় ব্যক্তি এ ধরনের অবৈধ কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত। এদের টাকা না দিলে বিধবা, বয়স্কভাতা হয় না। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, আমি ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। বৃদ্ধা ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সম্ভবত তিনি লাইভ ভেরিফিকেশনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে আসেননি তাই তাকে মৃত দেখানো হয়েছে। আমি সাক্ষর করেছি এটা সত্য তবে, এটা উদ্দেশ্য
প্রণোদিতভাবে নয়। লাইভ ভ্যারিফিকেশনে না আসা সব ভাতাভোগীদের পরিষদের রেজুলেশনে ভাতা বন্ধ করা হয়।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাছরুল্যাহ আল মাহমুদ বলেন, প্যানেল চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যায়নপত্র ও পরিষদের রেজুলেশনের ভিত্তিতে জানতে পারি, তিনি ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ এ মৃত্যুবরণ করেন। তাই ভাতাটি বন্ধ করা হয়েছে। কোনো মানুষ মারা গেলে আমরা সকল কাগজপত্র দেখে অন্য একজনকে প্রতিস্থাপন করি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিনুল হাসান বলেন, এটি সংশোধনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আশা করি সামছুন নাহার দ্রুতই বয়স্ক ভাতা পাবেন। এ ছাড়া আমরা তদন্ত করছি কে বা কারা এটার সঙ্গে জড়িত। যদি তদন্তের পর কেউ দোষী সাব্যস্ত হয় তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।