২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বামী ও শশুর পরিবারের নির্যাতনে গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট: ০২:০৬:৩২ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪
  • ২৪৯৫

স্টাফ রিপোর্টার-
নোয়াখালীর উপকূলীয় হাতিয়া উপজেলার চর ঈশ^র ফরাজী গ্রামে স্বামী ইরাক উদ্দিন ওরফে আজমীর হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের স্বীকার হয়ে গৃহবধুর মৃত্যুর অভিযোগে নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-০২ এর আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত গৃহবধুর পিতা খবির উদ্দিন বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযুক্ত ইরাক উদ্দিন ওরফে আজমীর হোসেন, আলাউদ্দিন ও রোকসানা বেগম সহ ৩ জনকে আসামী করে নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-০২ এর আদালতে মামলা দায়ের করে।

বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এদিকে গৃহবধু ফারসিনা আক্তার নিফা ১১ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছে। নিহতের শরীরে গলা, বুক ও পিঠ সহ বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে ভিক্টিম পরিবার জানান। ভিক্টিম পিতা আরো জানান ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে মূমূর্ষ রোগী রেখে পালিয়ে যান স্বামী।

এদিকে ঢাকা মেডিকেলে ময়না তদন্ত শেষে মঙ্গলবার সকালে নিহত গৃহবধুর পিতার নিজ গ্রাম হাতিয়ার দক্ষিন বিরবিরি গ্রামে লাশ দাফন করা হয়েছে। বিভিন্ন দফায় ঘটনার পর সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী সকালে। দীর্ঘ ১১ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজে মারা গেছে।

নিহতের পিতা খবির উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন. ২০১৭ সালে পারিবারিক ভাবে হাতিয়ার চর ঈশ^র ইউনিয়নের জমিদার পাঞ্চায়েত বাড়ির আলাউদ্দিনের ছেলে ইরাক উদ্দিন ওরপে আজমির হোসেনের সাথে নিহত গৃহবধুর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ২ টি সন্তান রয়েছে।বিয়ের পর থেকে মোটা অংকের যৌতুকের জন্য স্বামী ইরাক ও তার শশুর আলাউদ্দিন ও শাশুড়ী নির্যাতন করে আসছে। গৃহবধু তাদের এই দাবীর প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন সময়ে চলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। তারই অংশ হিসেবে ঘটনারদিন সকালে স্বামী ও শশুর পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে ব্যাপক মারধর করে এবং শ^াসরোধ করে হত্যা করে।

ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রচার করে প্রথমে হাতিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে ও পরে নোয়াখালীর মাইজদীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্ট্রোক রোগি দেখিয়ে ভর্তি করে। পরে তাকে আশংকা জনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ভিক্টিম ও তার নাম ঠিকানা ভুল লিপিবদ্ধ করে ভর্তি করে এবং ঘটনার অবস্থা খারাপ দেখলে রোগিকে (স্ত্রী) কে ফেলে পালিয়ে যায় স্বামী ইরাক। দীর্ঘ ১১ দিন ঢাকা মেডিকেলে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মারা যায় গৃহবধূ। এবিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আলা উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমরা এই ঘটনার সাথে জড়িত নহে। তবে কি কারনে এ ঘটনাটা ঘটেছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সে ঘটনাটি এড়িয়ে গিয়ে ফোন কেটে দেন।

এব্যাপারে জানতে চাইলে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিসান আহম্মেদ সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। গৃহবধু তার বাচ্চাকে মারলে শশুর ও স্বামী প্রতিবাদ করে তারপর স্বামীর সাথে রাগারাগি করে গৃহবধূ নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টা করে। প্রথমে তাকে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ডাক্তারদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী সদর ও পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করলে সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

সর্বাধিক পঠিত

স্বামী ও শশুর পরিবারের নির্যাতনে গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ

আপডেট: ০২:০৬:৩২ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার-
নোয়াখালীর উপকূলীয় হাতিয়া উপজেলার চর ঈশ^র ফরাজী গ্রামে স্বামী ইরাক উদ্দিন ওরফে আজমীর হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের স্বীকার হয়ে গৃহবধুর মৃত্যুর অভিযোগে নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-০২ এর আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত গৃহবধুর পিতা খবির উদ্দিন বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযুক্ত ইরাক উদ্দিন ওরফে আজমীর হোসেন, আলাউদ্দিন ও রোকসানা বেগম সহ ৩ জনকে আসামী করে নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-০২ এর আদালতে মামলা দায়ের করে।

বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এদিকে গৃহবধু ফারসিনা আক্তার নিফা ১১ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছে। নিহতের শরীরে গলা, বুক ও পিঠ সহ বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে ভিক্টিম পরিবার জানান। ভিক্টিম পিতা আরো জানান ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে মূমূর্ষ রোগী রেখে পালিয়ে যান স্বামী।

এদিকে ঢাকা মেডিকেলে ময়না তদন্ত শেষে মঙ্গলবার সকালে নিহত গৃহবধুর পিতার নিজ গ্রাম হাতিয়ার দক্ষিন বিরবিরি গ্রামে লাশ দাফন করা হয়েছে। বিভিন্ন দফায় ঘটনার পর সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী সকালে। দীর্ঘ ১১ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজে মারা গেছে।

নিহতের পিতা খবির উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন. ২০১৭ সালে পারিবারিক ভাবে হাতিয়ার চর ঈশ^র ইউনিয়নের জমিদার পাঞ্চায়েত বাড়ির আলাউদ্দিনের ছেলে ইরাক উদ্দিন ওরপে আজমির হোসেনের সাথে নিহত গৃহবধুর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ২ টি সন্তান রয়েছে।বিয়ের পর থেকে মোটা অংকের যৌতুকের জন্য স্বামী ইরাক ও তার শশুর আলাউদ্দিন ও শাশুড়ী নির্যাতন করে আসছে। গৃহবধু তাদের এই দাবীর প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন সময়ে চলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। তারই অংশ হিসেবে ঘটনারদিন সকালে স্বামী ও শশুর পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে ব্যাপক মারধর করে এবং শ^াসরোধ করে হত্যা করে।

ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রচার করে প্রথমে হাতিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে ও পরে নোয়াখালীর মাইজদীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্ট্রোক রোগি দেখিয়ে ভর্তি করে। পরে তাকে আশংকা জনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ভিক্টিম ও তার নাম ঠিকানা ভুল লিপিবদ্ধ করে ভর্তি করে এবং ঘটনার অবস্থা খারাপ দেখলে রোগিকে (স্ত্রী) কে ফেলে পালিয়ে যায় স্বামী ইরাক। দীর্ঘ ১১ দিন ঢাকা মেডিকেলে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মারা যায় গৃহবধূ। এবিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আলা উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমরা এই ঘটনার সাথে জড়িত নহে। তবে কি কারনে এ ঘটনাটা ঘটেছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সে ঘটনাটি এড়িয়ে গিয়ে ফোন কেটে দেন।

এব্যাপারে জানতে চাইলে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিসান আহম্মেদ সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। গৃহবধু তার বাচ্চাকে মারলে শশুর ও স্বামী প্রতিবাদ করে তারপর স্বামীর সাথে রাগারাগি করে গৃহবধূ নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টা করে। প্রথমে তাকে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ডাক্তারদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী সদর ও পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করলে সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।