১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা হত্যা মামলায় বাবা-ছেলেসহ গ্রেপ্তার ৩

স্টাফ রিপোর্টার-
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরে আশ্রয়ণ প্রকল্পে মো. সুলতান (৫৫) নামে এক রোহিঙ্গা হত্যা মামলার ৮ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কাঠের হাতলসহ ধারালো দা জব্দ করা হয়। মূলত কৃষি জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে ক্যাম্পের ১১৬নং ক্লাস্টারের সামনের সবজি বাগান থেকে ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৭৮নং ক্লাস্টারের মৃত আব্দুল আলীর ছেলে মো. সুলতানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মামলা দায়ের করলে হত্যাকাণ্ডের ৮ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৮২নং ক্লাস্টারের বাসিন্দা মৃত আব্দুস সালামের ছেলে মো. জলিল (৪৯), ৬৪নং ক্লাস্টারের বাসিন্দা মৃত আব্দুল আলীর ছেলে মোহাম্মদ হোছন (৫৬) ও মোহাম্মদ হোছনের ছেলে ওসমান গনি (২৪)।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মো. সুলতান সবজি চাষের জন্য ১১৬নং ক্লাস্টারে আসেন। তার ছেলে নুরুল আমিন নাস্তা আনলে তিনি খেয়ে কাজ শুরু করেন। এরপর নুরুল তার বাবাকে রেখে ৭৮নং ক্লাস্টারে চলে যায়। পরে দুপুরে ভাত নিয়ে এসে তার বাবাকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। এরপর আশপাশের লোকজন নিয়ে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ১১৬নং ক্লাস্টারের ভেতর তার বাবার রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পায়। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশে খবর দিলে তারা এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, সবজি ও মাছ চাষকে কেন্দ্র করে মো. জলিল, ওসমান গনি ও মোহাম্মদ হোছনের সঙ্গে টাকার লেনদেন হয়। সেখান থেকেই বিরোধের সৃষ্টি হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনায় আসামি জলিল জানান, তিনি সুলতানকে ডেকে ১২নং কক্ষে নিয়ে যান। মোহাম্মদ হোছন সুলতানের পা ধরে রাখে আর তিনি মাথা ধরে রাখে্ন। এরপর ওসমান গনি ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুলতানের গলাকাটেন। সুলতান মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ওসমান গনি ও মোহাম্মদ হোছন তাকে টেনে হিঁচড়ে রুমের এক কোণে নিয়ে যান। পরবর্তী সময়ে ওসমান গনি তার হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে তলপেটের নিচে ডান ও বাম পাশে কুপিয়ে রক্তাক্ত ও জখম করেন। মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা স্থান ত্যাগ করেন।
ভাসানচর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাওসার আলম ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জলিল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। সে আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবে বলে জানিয়েছে। আমরা আসামিদের আদালতে সোপর্দ করব। পাশাপাশি ওসমান গনি ও মোহাম্মদ হোছনের ৫ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করব। অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

সর্বাধিক পঠিত

নোবিপ্রবি ছাত্রী হলে অগ্নিকাণ্ড, পরীক্ষা স্থগিত

রোহিঙ্গা হত্যা মামলায় বাবা-ছেলেসহ গ্রেপ্তার ৩

আপডেট: ১১:৪৫:০২ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার-
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরে আশ্রয়ণ প্রকল্পে মো. সুলতান (৫৫) নামে এক রোহিঙ্গা হত্যা মামলার ৮ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কাঠের হাতলসহ ধারালো দা জব্দ করা হয়। মূলত কৃষি জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে ক্যাম্পের ১১৬নং ক্লাস্টারের সামনের সবজি বাগান থেকে ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৭৮নং ক্লাস্টারের মৃত আব্দুল আলীর ছেলে মো. সুলতানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মামলা দায়ের করলে হত্যাকাণ্ডের ৮ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৮২নং ক্লাস্টারের বাসিন্দা মৃত আব্দুস সালামের ছেলে মো. জলিল (৪৯), ৬৪নং ক্লাস্টারের বাসিন্দা মৃত আব্দুল আলীর ছেলে মোহাম্মদ হোছন (৫৬) ও মোহাম্মদ হোছনের ছেলে ওসমান গনি (২৪)।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মো. সুলতান সবজি চাষের জন্য ১১৬নং ক্লাস্টারে আসেন। তার ছেলে নুরুল আমিন নাস্তা আনলে তিনি খেয়ে কাজ শুরু করেন। এরপর নুরুল তার বাবাকে রেখে ৭৮নং ক্লাস্টারে চলে যায়। পরে দুপুরে ভাত নিয়ে এসে তার বাবাকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। এরপর আশপাশের লোকজন নিয়ে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ১১৬নং ক্লাস্টারের ভেতর তার বাবার রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পায়। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশে খবর দিলে তারা এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, সবজি ও মাছ চাষকে কেন্দ্র করে মো. জলিল, ওসমান গনি ও মোহাম্মদ হোছনের সঙ্গে টাকার লেনদেন হয়। সেখান থেকেই বিরোধের সৃষ্টি হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনায় আসামি জলিল জানান, তিনি সুলতানকে ডেকে ১২নং কক্ষে নিয়ে যান। মোহাম্মদ হোছন সুলতানের পা ধরে রাখে আর তিনি মাথা ধরে রাখে্ন। এরপর ওসমান গনি ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুলতানের গলাকাটেন। সুলতান মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ওসমান গনি ও মোহাম্মদ হোছন তাকে টেনে হিঁচড়ে রুমের এক কোণে নিয়ে যান। পরবর্তী সময়ে ওসমান গনি তার হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে তলপেটের নিচে ডান ও বাম পাশে কুপিয়ে রক্তাক্ত ও জখম করেন। মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা স্থান ত্যাগ করেন।
ভাসানচর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাওসার আলম ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জলিল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। সে আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবে বলে জানিয়েছে। আমরা আসামিদের আদালতে সোপর্দ করব। পাশাপাশি ওসমান গনি ও মোহাম্মদ হোছনের ৫ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করব। অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।