স্টাফ রিপোর্টার-
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৪ কেন্দ্রের ভোটের ফলাফল স্থগিত করে পুনরায় ভোট গ্রহণ এবং বাতিল কৃত ১৯১৪ টি ভোট পুনঃগননা করতে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে পরাজিত প্রার্থী এ.এইচ.এম. খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরে সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর এই আবেদন করেন এ.এইচ.এম. খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম। একই সঙ্গে তিনি এই আবেদনের কপি প্রধান নির্বাচন কমিশনার, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও জেলা প্রশাসকের কাছে অনুলিপি হিসেবে প্রেরণ করেন।

লিখিত আবেদনে এ.এইচ.এম. খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম বলেন, বুধবার (০৮ মে) সকাল ৮টা থেকে সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদের আওতাধীন ৪০ নং চর মহি উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, ৪১ নং চর মহি উদ্দিন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪২ নং চর মহি উদ্দিন এন এ প্রো সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৪৭ নং হাজীপুর বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বহুমুখী দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই কেন্দ্রগুলোতে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আনারস প্রতিকের কর্মী-সমর্থকগন ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা দেওয়াসহ নানাভাবে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে। তারপরও ভোটাররা সকল বাধা অতিক্রম করে সুশৃঙ্খলভাবে কেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। ভোট গহণ শেষে ভোট গণনা শুরু হলে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর এজেন্ট ও কর্মীগন প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারগণের যোগসাজশে আমার দোয়াত-কলম প্রতিকের বেশ কিছু ভোট আনারসের বান্ডিলে বেঁধে গণনা করার চেষ্টা করে। এসময় আমার এজেন্টের আপত্তির মুখে সঠিকভাবে ভোট গোছানোর পর গণনা করা হলে অভিযুক্ত কেন্দ্রগুলোতে আমি জয়লাভ করেছি বলে গণনায় প্রকাশ পায়।

খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম আরো বলেন, পরবর্তীতে আমার এজেন্টগনকে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে বিপুল সংখ্যক অব্যবহৃত ব্যালেটে নতুন করে সীল দিয়ে অন্যায় ও অনধিকারে ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করে আমাকে পরাজিত দেখানোর চেষ্টা করা হয় বলে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। এসব ভোট কেন্দ্রের ভোট গণনার পর নতুন করে ভোট সংযোজন করায় ভোটের ফলাফল মারাত্মক প্রাভাবিত হয়েছে। যার কারণে ওই কেন্দ্রগুলোর ভোটের ফলাফল স্থগিত রেখে প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে বাতিলক্রমে অভিযুক্ত কেন্দ্রগুলোতে নতুন করে ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

একই আবেদনে সেলিম বলেন, বেসরকারী ফলাফলে দেখা যায় পুরো উপজেলায় ১৯১৪টি ভোট বাতিল দেখানো হয়েছে, যা সম্পূন্ন অবৈধ এবং অযোক্তিক। এই বর্নিত বাতিলকৃত ভোটগুলোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র সমূহে আমার দায়িত্বপ্রাপ্ত এজেন্টগণ প্রিজাইডিং অফিসারগণের নিকট আপত্তি করেন কিন্তু প্রিজাইডিং অফিসারগণ তাদের আপত্তি শোনেননি। তিনি বলেন, আমার এজেন্টগণ আমাকে জানিয়েছে ওই বাতিলকৃত ভোটগুলো দোয়াত-কলম মার্কার ছিল। যার কারণে আমাকে অল্প ভোটে পরাজিত দেখানো হয়েছে।

৪টি ভোট কেন্দ্রের ভোট গণনা ও ভোট গ্রহণ শেষে নতুন করে ব্যালট জালিয়াতির মাধ্যমে ভোটের ফলাফল পাল্টে দেওয়ায় ওই কেন্দ্রগুলোর ফলাফল ঘোষণা স্থগিত করে পুনঃরায় ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারনের ব্যবস্থা এবং ওই বাতিলকৃত ১৯১৪টি ভোট পুনঃগননা করার পর চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার দাবি জানান এ.এইচ.এম. খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম।

নোয়াখালী জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ও সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. নওয়াবুল ইসলাম লিখিত আবেদটি পেয়েছেন নিশ্চিত করে বলেন, এটি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিষয়। ট্রাইব্যুনাল চাইলে পরবর্তীতে পুনঃনির্বাচন কিংবা ভোট পুনঃগননা করতে পারেন।