১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে নিঝুমদ্বীপ প্লাবিত, ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

প্রস্তুত করা হয়েছে ৪৬৬টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৭৫টি মুজিব কেল্লা

মোঃ নুর হোসাইন-
বেড়ীবাঁধ না থাকায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।

রোববার (২৬ মে) সকাল থেকে শুরু হওয়া জোয়ারে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। হাতিয়ার চারপাশে নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১০ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ৯ ওয়ার্ডের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। এছাড়াও হাতিয়ার তমরুদ্দি ও চরকিং ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়ীবাঁধ দিয়ে ৩-৪ ফুট উচ্চতায় জোয়ারের পানি ঢুকছে।

স্থানীয়রা জানান, সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া টানা বর্ষণ, অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে পুরো নিঝুমদ্বীপ প্লাবিত হয়েছে। ফলে এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে বাড়িগুলোতে। বেড়িবাঁধ না থাকায় সহজেই জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হয় নিঝুম দ্বীপ।

স্থানীয় বাসিন্দা জসিম মিয়া বলেন, বন্দর কিল্লা, নামার বাজার, ইসলামপুর ও মোল্লা গ্রামসহ পুরো নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে। মানুষজন ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। পানিতে ভেসে গেছে গবাদিপশুর খাদ্য ও মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে শাকসবজিসহ নানা ফসলের জমি।

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দিনাজ উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ নেই তাই সকাল থেকে এখানে জোয়ারের পানি উঠেছে। বিকেলেও জোয়ার কেবল বাড়ছেই। মানুষ পানিবন্দির পাশাপাশি সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে। রাস্তাঘাট সব তলিয়ে গেছে। সব মিলিয়ে নিঝুমদ্বীপের সকল ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশীষ চাকমা বলেন, জোয়ার এখনো চলমান আছে। আমরা এই মুহূর্তে ক্ষতির পরিমাণ বলতে পারছি না। নিঝুমদ্বীপের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা খোঁজ রাখছি। কোথাও কোনো ক্ষতি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।

এদিকে আজ দুপুরের পরে জেলা পুলিশ সুপার জনাব আসাদুজ্জামানের নির্দেশনা মোতাবেক ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় এবং দুর্যোগ পরর্বতী উদ্ধারসহ অন্যান্য নিরাপত্তামুলক কার্যক্রম সমপন্ন করতে জেলা পুলিশ লাইন্স, ১০ টি থানা, ফাঁড়িসহ মোট ২৬টি স্থাপনায় প্রায় ১০০০ পুলিশ সদস্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। এবং এসংক্রান্ত্রে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় একটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসাছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পাওয়া সর্বশেষ তথ্যমতে নোয়াখালীর উপকূলীয় এলাকায় ০৯নং মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব ও ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৪৬৬ টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৭৫টি মুজিবকেল্লা। এছাড়াও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনের ৮হাজার ৯১০ জন সে¦চ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন।

সর্বাধিক পঠিত

নোবিপ্রবি ছাত্রী হলে অগ্নিকাণ্ড, পরীক্ষা স্থগিত

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে নিঝুমদ্বীপ প্লাবিত, ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

আপডেট: ০২:২০:০৫ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪

প্রস্তুত করা হয়েছে ৪৬৬টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৭৫টি মুজিব কেল্লা

মোঃ নুর হোসাইন-
বেড়ীবাঁধ না থাকায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।

রোববার (২৬ মে) সকাল থেকে শুরু হওয়া জোয়ারে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। হাতিয়ার চারপাশে নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১০ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ৯ ওয়ার্ডের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। এছাড়াও হাতিয়ার তমরুদ্দি ও চরকিং ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়ীবাঁধ দিয়ে ৩-৪ ফুট উচ্চতায় জোয়ারের পানি ঢুকছে।

স্থানীয়রা জানান, সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া টানা বর্ষণ, অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে পুরো নিঝুমদ্বীপ প্লাবিত হয়েছে। ফলে এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে বাড়িগুলোতে। বেড়িবাঁধ না থাকায় সহজেই জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হয় নিঝুম দ্বীপ।

স্থানীয় বাসিন্দা জসিম মিয়া বলেন, বন্দর কিল্লা, নামার বাজার, ইসলামপুর ও মোল্লা গ্রামসহ পুরো নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে। মানুষজন ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। পানিতে ভেসে গেছে গবাদিপশুর খাদ্য ও মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে শাকসবজিসহ নানা ফসলের জমি।

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দিনাজ উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ নেই তাই সকাল থেকে এখানে জোয়ারের পানি উঠেছে। বিকেলেও জোয়ার কেবল বাড়ছেই। মানুষ পানিবন্দির পাশাপাশি সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে। রাস্তাঘাট সব তলিয়ে গেছে। সব মিলিয়ে নিঝুমদ্বীপের সকল ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশীষ চাকমা বলেন, জোয়ার এখনো চলমান আছে। আমরা এই মুহূর্তে ক্ষতির পরিমাণ বলতে পারছি না। নিঝুমদ্বীপের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা খোঁজ রাখছি। কোথাও কোনো ক্ষতি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।

এদিকে আজ দুপুরের পরে জেলা পুলিশ সুপার জনাব আসাদুজ্জামানের নির্দেশনা মোতাবেক ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় এবং দুর্যোগ পরর্বতী উদ্ধারসহ অন্যান্য নিরাপত্তামুলক কার্যক্রম সমপন্ন করতে জেলা পুলিশ লাইন্স, ১০ টি থানা, ফাঁড়িসহ মোট ২৬টি স্থাপনায় প্রায় ১০০০ পুলিশ সদস্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। এবং এসংক্রান্ত্রে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় একটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসাছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পাওয়া সর্বশেষ তথ্যমতে নোয়াখালীর উপকূলীয় এলাকায় ০৯নং মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব ও ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৪৬৬ টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৭৫টি মুজিবকেল্লা। এছাড়াও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনের ৮হাজার ৯১০ জন সে¦চ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন।