ছবি: সংগৃহীত
‘বাউন্ডারি লাইনে পা লাগেনি’ – ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে বিশ্বকাপের ফাইনালের সেই বিতর্কিত ক্যাচ নিয়ে আলাপে ঠিক এভাবেই নিজের দুর্দান্ত ক্যাচের পক্ষে বললেন ভারতের ব্যাটার বললেন সূর্যকুমার যাদব। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে হার্দিক পান্ডিয়ার বলে বাউন্ডারি লাইনে সূর্যের ওই অসাধারণ ক্যাচই যেন ভাগ্য গড়ে দেয় বিশ্বকাপের।
তবে এই নিয়ে বিতর্ক আছে। বাউন্ডারি লাইনে সূর্যকুমারের পা স্পর্শ করেছিল কি না তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন আছে, তেমনি বাউন্ডারি সরে গিয়েছিল কি না তা নিয়েও কথা বলেছেন অনেকেই। একাধিক বৈশ্বিক গণমাধ্যমের দাবি বাউন্ডারি লাইন খানিক পিছিয়ে গিয়েছিল। আর তাতেই ক্রিকেটের আইন অনুযায়ী ছয় রান পাওয়ার কথা দক্ষিণ আফ্রিকার।
কিন্তু এমন কিছু ঘটেনি বলেই মন্তব্য ফিল্ডার সুর্যকুমারের। নিজ দেশের গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘রোহিত ভাই সাধারণত লং অনে দাঁড়ান না, তবে ওই মুহূর্তে ছিলেন। বল যখন আসছিল, তখন আমি তার দিকে তাকাই একবার, তিনিও আমার দিকেই তাকিয়েছিলেন। আমি দৌড়ালাম, লক্ষ্য ছিল বলটা ধরা। তিনি (রোহিত শর্মা) যদি কাছাকাছি থাকতেন আমি বল তার দিকে ঠেলে দিতাম। কিন্তু কাছাকাছি ছিলেন না তিনি। ওই চার থেকে পাঁচ সেকেন্ডে যা হয়েছে, আমি ব্যাখ্যা করতে পারব না।’
সূর্যকুমার যাদবের ক্যাচ নেওয়ার ছবি ক্যাচ কি ঠিকঠাক নিয়েছিলেন সূর্যকুমার? এমন প্রশ্নে তার উত্তর, ‘বলটা যখন আমি ওপরের দিকে ঠেলে দিই আর ক্যাচটা নিই, আমি জানতাম দড়িতে আমার পা লাগেনি। আমি সেই সময় কেবল ওটা নিয়েই ভাবছিলাম। আমি জানতাম, এটা পরিষ্কার একটা ক্যাচ।
অবশ্য সূর্যকুমারের বিশ্বাস, ছক্কা হলেও ভারতই শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতে ফিরত, ‘ওটার পর যেকোন কিছুই হতে পারত। যদি বলটা ছয়ই হতো, তাহলে সমীকরণ কী হতো? ৫ বলে ১০। আমরা হরত এরপরেও জিততাম, কিন্তু ব্যবধান আরও কমে আসতো।’
এদিকে বাউন্ডারি সরে গিয়েছিল কি না এমন প্রশ্নের উত্তর মিলেছে ভারতীয় ধারাভাষ্যকরা রাজনীশ গুপ্তের এক টুইটে। এই কমেন্টেটর দাবি করেছেন, যেহেতু ফাইনালে পিচ বদল হয়েছিল, তাই ওই প্রান্তের বাউন্ডারিও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ম্যাচের শুরু থেকেই এটি করা হয়েছিল। সব ম্যাচেই প্রয়োজন মতো বাউন্ডারি ছোট-বড় করা হয়। এখানেও সেটিই করা হয়েছে। তাই আগের বাউন্ডারি দড়ি যেখানে ছিল, সেই দাগ দেখা যাচ্ছে।
সূর্যকুমার ম্যাচের যে সময় বুদ্ধি করে ক্যাচটি নিতে সফল হয়েছিলেন, তা অবিশ্বাস্য বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় দলের ফিল্ডিং কোচ দিলীপ। বলছেন, ‘অনেকেই সূর্যকুমারের ক্যাচটা নিয়ে জানতে চাইছেন। অনুশীলনে এ রকম ক্যাচ ও অন্তত ৫০টা ধরেছে। তবে ম্যাচের সময় সিদ্ধান্তটা ওরই ছিল। উপস্থিত বুদ্ধি এবং ক্রিকেট সচেতনতার উদাহরণ ওই ক্যাচ। বাউন্ডারির দড়ি কোথায় আছে, সে সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা ছিল সূর্যকুমারের। তাই ওকে ক্যাচটা ধরার সময় যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী দেখিয়েছে।
সূর্যকুমার নিজে অবশ্য ক্যাচের জন্য কৃতিত্ব দিয়েছেন কোচ দিলীপকেই। ‘ম্যাচের একদিন আগে আমরা কোয়ালিটি ফিল্ডিং নিয়ে ১০ থেকে ১২ মিনিটের একটি সেশন করেছিলাম। যেখানে ১০টা উঁচু ক্যাচ, ফ্ল্যাট ক্যাচ, ডিরেক্ট হিট, স্লিপ ক্যাচ অনুশীলন করি। এটা কেবল একদিনের অনুশীলন না। আমি এমন ক্যাচ আইপিএলে কিংবা দ্বিপাক্ষিক সিরিজের সময়েও অনুশীলন করি।’