মোঃ নুর হোসাইন :
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল যেন অনিয়ম ও দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য৷ অব্যবস্থাপনা, অপরিষ্কার, অপরিচ্ছন্নতা, দালালদের দৌরাত্ম্য, চিকিৎসা বানিজ্য, ডাক্তারদের চেম্বার না করা এখানকার নিত্তনৈমিত্তিক ঘটনা। স্বৈরাচারের পতনের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সহ দেশের সব সেক্টর সংস্কারে নেমেছে ছাত্রসমাজ। এর পুর্বে আরো দুদিন ০৭ ও ১১ আগষ্ট হাসপাতালের কার্যক্রম মনিটরিং করার পর তারই ধারাবাহিকতায় আজকে হসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ১০ দফা দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নোয়াখালী।
আজ মঙ্গলবার (১৩ আগষ্ট) সকাল ১১:০০ ঘটিকার সময় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল প্রাঙ্গণে “সাধারণ নাগরিকদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতের লক্ষ্যে” স্বাস্থ্য খাতে শুদ্ধিকরণ ও শান্তি সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এতে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ, নোয়াখালী সরকারি ম্যাটস, নোবিপ্রবি ও নোয়াখালী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নোয়াখালী জেলা শাখা সমন্বয়ক আরিফুল ইসলাম, মোঃ হাসিব, রাকিব মাজহার সহ আরো কয়েকজন। সমাবেশ থেকে তারা হাসাপাতাল কর্তপক্ষের কাছে ১০ দফা দাবি পেশ করে এবং সমাবেশ শেষে হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. হেলাল উদ্দিনের কাছে লিখিত ভাবে দাবী গুলো তুলে ধরে।
শিক্ষার্থীদের দাবী গুলো হলো
১।চিকিৎসক নামক সন্ত্রাস আবাসিক মেডিকেল অফিসার দূর্ণিতিবাজ ডা: আনোয়ারুল আজীম (RMO) সহ সকল প্রকার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে বহিস্কার করতে হবে। এবং তাদের অবৈধ আয়ের উৎস সরকারিভাবে তদন্ত করতে হবে।
২। সদর হাসপাতালকে দালাল মুক্ত করতে হবে এবং দালাল প্রতিরোধে শক্তিশালী তথ্যসেবা প্রধান কেন্দ্র ও মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে ( এই তথ্য সেবা কেন্দ্র ও দরিদ্র ও অসহায় রোগিদের সেবা নিশ্চিত করতে হবে)
৩।ইমার্জেন্সি ও ওয়ার্ডের নির্ধারিত ফি এর বাইরে কোন ফি নেওয়া যাবেনা। ফি এর বিপরীতে রশিদ দিতে হবে। কেউ অতিরিক্ত ফি নিলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪।সদর হাসপাতালে কর্মরত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী হসপিটাল অভ্যন্তর রাজনীতি করতে পারবেনা এবং হাসপাতালে টেন্ডারবাজি করা নিষিদ্ধ করতে হবে।
৫।বৈধ প্রশিক্ষাণার্থীদের (MBBS,BDS,DMF (4yr) Nursing) প্রশিক্ষণসহ ইন্টার্নশীপের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। নামে-বেনামে সকল প্রকার অবৈধ কোর্স অনুমোদন এবং প্রশিক্ষণ গ্রহণ বন্ধ করতে হবে।
৬। হাসপাতালে সরবরাহকৃত ঔষধ রোগিদের মধ্যে সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। সরবরাহকৃত ঔষধের তালিকা যথাস্থানে টানানো থাকতে হবে। টাকা দিয়ে সরকারি ঔষধ নেওয়া বন্ধ করতে হবে। ঔষধের হিসেব যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
৭। অফিস কতৃক অবৈধভাবে বিভিন্ন প্রজেক্টে ও মাষ্টার রোলে নিয়োগকৃত দূর্ণিতিগ্রস্থ কর্মিদের নিয়োগ বাতিল করতে হবে।
৮। ইনডোর এবং আউটডোরে সার্বক্ষণিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের উপস্থিতি রোষ্টার করে নিশ্চিত করার মাধ্যমে রোগিদের যথাযথ চিকিৎসাসেবা ও ইন্টার্নিদের যথাযথ প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণে নিশ্চিত করতে হবে।
৯। রোগ নির্ণয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল জনবল ( টেকনোলজিষ্ট, টেকনিশিয়ান ও সহায়ক ) ডিউটি আওয়ার টাইমে কর্মস্থলে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে এবং নিরবচ্ছিন্ন তদারকি করতে হবে। সকল প্রকার পরিক্ষা নিরিক্ষার মূল্য তালিকা ও বিভিন্ন ফি এর তালিকা বিভিন্ন স্থানে টানানো থাকতে হবে। অকার্যকর যন্ত্র মেরামত ও নতুন যন্ত্রপাতি সেবায় সংযোজন করতে হবে।
১০। হাসপাতালে অভ্যান্তরীন পরিবেশ (ড্রেনেজ ব্যবস্থা ) সর্বাধিক গুরত্ব সহকারে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।এবং সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।