আশিকুর রহমান
৫৩ বছরেও নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই গাইনি ডাক্তার। ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করলেও বাড়েনি জনবল। মাত্র পাঁচজন চিকিৎসক দিয়েই চলছে ৮ লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবা। জনবল সংকটের কারণে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষকে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে জেলা শহরে জনবল বৃদ্ধি ও ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার দাবিতে মানববন্ধন করে হাতিয়ার সম্মিলিত সামাজিক সংগঠন।
জানা যায়, ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি থাকলেও চিকিৎসক ও অন্যান্য জনবল সংকটের কারণে আল্ট্রাসনোগ্রাফি ও ইসিজি প্রভৃতি যন্ত্রপাতিগুলো অব্যবহৃত থেকে নষ্ট হচ্ছে। ৫০ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন আউটডোরে গড়ে সাড়ে তিনশ’র বেশি রোগী আসে, শয্যাগুলোতে শতাধিক রোগী ভর্তি থাকে। রোগীদের সেবা দিতে কর্তৃপক্ষের খুবই সমস্যা হয়। শয্যা সংখ্যা উন্নীত করার এলাকাবাসীর দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ৫০ শয্যার হাসপাতালকে ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ, এমবিবিএস ডাক্তার, নার্স ও বিভিন্ন শূন্য পদে নিয়োগ প্রদান এবং নৌ-অ্যাম্বুলেন্স চালুকরণসহ বিভিন্ন দাবিতে মানববন্ধন করে হাতিয়ার সম্মিলিত সামাজিক এই সংগঠনটি।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, হাতিয়া উপজেলা নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ। এই উপজেলায় মোট জনসংখ্যা প্রায় ৮ লাখ। এই ৮ লাখ মানুষের জনসংখ্যার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য ৫০ শয্যার হাসপাতালটি কোনোভাবে সু-চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারছে না। এ ছাড়াও এমবিবিএস ডাক্তার, নার্সসহ বিভিন্ন শূন্য পদে নিয়োগ প্রদান, নৌ-অ্যাম্বুলেন্স চালু করণসহ বিভিন্ন দাবিতে প্রশাসনসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত ৫০ শয্যা হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার জোর দাবি জানান তারা।
মানববন্ধন শেষে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ নোয়াখালী জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জন বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এ সময় হাতিয়া মানব কল্যাণ ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা জুবায়ের হোসেন, আমাদের হাতিয়া সংগঠনের সভাপতি আয়াত হোসাইন জুয়েল, হাতিয়া একতা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব, জাগ্রত দ্বীপ হাতিয়া সংগঠনের আজগর হোসেন আকাশ, নোয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতিয়া স্টুডেন্ট ফোরামের সভাপতি আব্দুস সালাম শিবলু, হাতিয়া স্টুডেন্ট ফোরাম নোয়াখালীর সাধারণ সম্পাদক এম এ ওসমান ও হাতিয়া ছাত্রকল্যাণ পরিষদ নোয়াখালীর সভাপতি রবিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, আমরা স্মারকলিপি পেয়েছি। দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার বিষয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। তাদের জন্য সরকারিভাবে গাইনি চিকিৎসক দিতে পারি নাই সত্য তবে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে গাইনি চিকিৎসক দিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আমরা আরও কিছু প্রস্তাব দেবো। অচিরেই তা স্বাস্থ্য বিভাগকে অবহিত করব।