ষ্টাফ রিপোর্টার
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মঞ্জুরুল আলম রিয়াদ বলেছেন, শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেটের বাইরে ছাত্রদল কোন রাজনীতি করবেনা। ৫ই আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূল্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিকে কিভাবে আরো ইতিবাচক ও কল্যাণমূখী করা যায়, সেজন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমান নির্দেশনা দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্তের ও মতামতের ভিত্তিতে ছাত্র রাজনীতি পরিচালনা করতে। আমরা মনে করছি শিক্ষার্থীদের অংশীদারীত্বের ভিত্তিতে ছাত্রদলের রাজনীতি চলবে।
বুধবার (২৭শে নভেম্বর) সকালে নোয়াখালী সরকারী কলেজে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফার বার্তা শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিতে আয়োজিত গণজমায়েত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সকাল দশটা থেকে নোয়াখালী সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের গণজামায়েতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মনজুরুল আলম রিয়াদ। আরো উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আকবার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম সোহাগ, সাংগঠনিক সম্পাদক আকতারুজ্জামান বিশাল,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুরশিদুর রহমান রায়হান প্রমুখ।
৩১ দফা নিয়ে এসময় তিনি বলেন, গত তিনটি নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ তাদের মতামত দিতে পারেনি। বাংলাদেশের মানুষকে জিম্মি করে গত ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিলো খুনি হাসিনা সরকার। ১৪ সালের বিনা ভোটে নির্বাচন, ১৮ সালের নির্বাচন, ২৪ এর ডামি নির্বাচন নির্বাচন হয়েছিলো যেটি মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রতিটি নির্বাচনের সময় প্রতিটি ডিপার্টমেন্টকে দলীয়করণ করা হয়েছে। তার বিপরীতে মানুষ যদি বিএনপিকে ভোট দিয়ে ভোট দেয় তাহলে রাষ্ট্রকে কোন চোখে দেখতে চায় সেজন্য আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১টি দফা দেওয়া হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের লিফলেট বিতরণ করছি। তাদের মতামত নিচ্ছি। আমাদের ৩১ দফা চিন্তা ভাবনার সাথে মৌলিক কোন বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলে মেইল এবং হোয়াটসঅ্যাপে মতামত দেওয়া যাবে। ইতোমধ্যে আমি ১২০ টিরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। তারাও শত শত মতামত ব্যক্ত করছে আমাদের।
ছাত্রলীগ নিয়ে ছাত্রদলের এই নেতা বলেন, অতীতে খুনি সংগঠন, যে সংগঠন সন্ত্রাস বিরোধী আইনে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ হয়েছে। যেহেতু ৫ই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের গণ আকাঙ্খার ফসল ছিলো খুনি সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। যেহেতু এই সিদ্ধান্তে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট হয়েছে সেজন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংগঠন হিসেবে ছাত্রদল ছাত্রলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধকে আমরা স্বাগত জানাই। ছাত্রদল ছাত্রলীগের মতো কখনো রাজনীতি করবে না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে ছাত্রদলের রাজনীতি পরিচালিত হবে।
এসময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মতামত শুনতে চাওয়া হলে নুরুল আলম শাহেদ নামের একজন কলেজ ছাত্র প্রশ্ন করেন, “ছাত্রলীগের মতো জোর জবরদস্তি করে রাজনীতি করবে কিনা ছাত্রদল?” এই প্রশ্নের জবাবে মনজুরুল আলম রিয়াদ বলেন, ছাত্রদল ছাত্রলীগের মতো কখনো জোর জবরদস্তি করে রাজনীতি করেনি, করবেও না। এরকম কোন অভিযোগ যদি থাকে তাহলে আমাদেরকে জানাবেন। আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিব। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দখলদারিত্বভিত্তিক গতানুগতিক ছাত্র রাজনীতির অবসান সম্পন্ন হয়েছে৷ শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে একুশ শতকের উপযোগী একটি মেধাভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি বিনির্মাণ করার জন্য আমরা দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছাত্রদলের রাজনীতির অংশীদার করতে চাই৷ যাতে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি সুষ্ঠু রাজনীতি চর্চার মধ্য দিয়ে আগামী দিনে পূর্ণাঙ্গ নাগরিকে পরিণত হতে পারেন, দেশপ্রেমিক হয়ে উঠতে পারেন৷ আমাদের বিশ্বাস, এর ফলে সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে বাংলাদেশের যাত্রা বেগবান হবে৷