
স্টাফ রিপোর্টার:
নোয়াখালী সদর উপজেলার চর মটুয়া ইউনিয়নে ফাউন্ডেশনের অর্থ সরকারি তহবিলে না দেওয়ায় মো. আব্দুল খালেক (৩০) নামের এক সমাজকর্মীর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা ও প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যাচেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী যুবলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে।
রবিবার দুপুর ৩টার দিকে চর মটুয়া ইউনিয়নের নাইজ্জার ভাংটি বাজার এলাকায় এই ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে।
আহত আব্দুল খালেক ‘সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার বৈকুণ্ঠপুর ফাউন্ডেশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও আব্দুল ওয়াদুদের (৫৩) ছেলে। বর্তমানে তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় নোয়াখালী প্রাইম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত মাসে স্থানীয় এক প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষ থেকে খালেককে মৌখিকভাবে হুমকি দিয়ে জানানো হয়—তার ফাউন্ডেশন থেকে নোয়াখালী ৪ আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর কোভিড-১৯ ত্রাণ তহবিলে ৭৫ লাখ টাকা হস্তান্তর করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থ না দেওয়ায় রোববার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে সমাজকর্মী খালেকের উপর চরম বর্বরতা চালানো হয়।
স্থানীয়রা জানান, বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে আলী হাসান হিরো (৪৫), সাদ্দাম হোসেন (৩৫), মিজানুর রহমান (৪২) ও শামসুর রহমান (৪৭) তাকে পথরোধ করে। একপর্যায়ে তারা বলতে থাকে, “তুমি কেন আমাদের দলে আসছো না? এমপির নির্দেশ অমান্য করছো কেন?” এরপর আর কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা হকিস্টিক দিয়ে তার মাথা, পাঁজর ও মুখে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। রাস্তায় ফেলে বুটজুতা দিয়ে পেটানো হয় তাকে।এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মূমুর্ষ অবস্থায় রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। সাধারণ পথচারীরাও প্রথমে ভয়ে এগিয়ে না আসলেও পরে কয়েকজন সাহস করে এগিয়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, খালেকের শরীরে একাধিক জায়গায় মারাত্মক জখম রয়েছে। মাথায় হাতে ও পেটের ডান পাশে গভীর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, পরিপূর্ণ সুস্থ হতে আরো সময়ের প্রয়োজন এবং দীর্ঘদিন তাকে মেডিসিন চালিয়ে যেতে হবে।
আহতের পরিবার ও সহকর্মীরা জানান, খালেক একজন নিরপেক্ষ সমাজকর্মী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে গরিব-দুঃখীদের জন্য কাজ করে আসছেন। তার ফাউন্ডেশনের তহবিল সরকার অনুমোদিত নয়, বরং দাতাদের দেওয়া অর্থ দিয়ে পরিচালিত হয়। রাজনৈতিক চাপের মুখে সে অর্থ কোথাও ট্রান্সফার করা সম্ভব ছিল না। আর এতেই ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা।
হামলার পর কিছুটা সুস্থ হয়ে খালেক ও তার পরিবার স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে আওয়ামিলীগ নেতাদের ভয়ে পুলিশ ভুক্তভোগীদের অভিযোগ গ্রহণ করেনি বলে জানিয়েছেন তারা। তারা আরো জানান, থানার কর্মকর্তারা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অভিযোগ না নিয়ে তাদের ফিরিয়ে দেন। এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে হতাশ এবং ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী