১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৮৬৫০ জন বন্যার্তদের মাঝে নোবিপ্রবি ফার্মাসি বিভাগের চিকিৎসা সেবা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট: ১০:০১:৪০ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৮৬৫

মোসতাকিম সাদিক:
নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় বন্যার্তদের মাঝে জরুরি চিকিৎসা সেবা পৌছে দিয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ফার্মেসি বিভাগ পরিচালিত ‘ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিস’ টিম। ৮৬৫০ জনকে ৩ লক্ষ ৬২ হাজার ২ শত ২৫ টাকা চিকিৎসা সেবা দেওয়ার মাধ্যম এই কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম ভবনের আইকিউএসি রুমে এই ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিস এর কার্যক্রমের সমাপনী ও ভলেন্টিয়ারদের মাঝে সার্টিফিকেট বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান ও ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিস টিমের প্রধান অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ ইসমাইল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আয়োজনের শুরুতে এই কার্যক্রমের বিস্তারিত তুলে ধরেন ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিসের টিম লিডার মুহাম্মদ সোহাগ মিয়া বলেন, নোয়াখালী, ফেনি, লক্ষ্মীপুরের বন্যার্ত মানুষের পাশে যথাযথ চিকিৎসা সেবা প্রদানে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের উদ্যোগে গত ২৩ আগস্ট “ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিস” গঠন করে। জেলাত্রয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মেডিসিন, ওয়াটার পিউরিফিকেশন ট্যাবলেট, স্যানিটারি ন্যাপকিন, স্যালাইন সহ প্রাথমিক প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছে দেয় আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা। প্রথমত আমাদের ফার্মেসী বিভাগ নিজস্ব কিছু অর্থায়নে এই সেবা সমূহ চালু করলেও পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন জেলা হতে আমরা সাহায্য পেতে শুরু করি। বিভিন্ন কোম্পানি, এজেন্সি এবং ব্যক্তিগত ভাবে কিছু শিক্ষকমণ্ডলীদের সাহায্য আমাদের নিকট পৌছায়।

এছাড়াও ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের এ ধরনের উদ্যোগের সাথে যুক্ত থাকায় কৃতজ্ঞতা জানান বিভাগের শিক্ষকেরা।আগামীতেও সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এই ধরনের কার্যক্রমে যুক্ত থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিভাগের শিক্ষকরা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ ইসমাইল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করেন।উপাচার্য ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিস টিমের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন,একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু পড়াশোনা নয়,পড়াশোনার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকে।দুর্যোগ মূহুর্তে বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিতভাবে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছে।ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বন্যা দুর্গতদের সহযোগিতা করেছেন। সাধারণ মানুষ শুধুমাত্র ত্রাণসামগ্রী প্রদানের মাধ্যমে বন্যার্তদের সাহায্য করেছেন।কিন্তু ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা বন্যার্তদের চিকিৎসাসেবার মাধ্যমে যে টেকনিক্যাল সার্ভিস দিয়েছেন তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিস টিমের সাথে যারা বিভিন্নভাবে যুক্ত ছিলেন তাদের ধন্যবাদ জানাই।তরুণ শিক্ষার্থীরা এধরনের উদ্যোগে যুক্ত থাকার মাধ্যমে অর্জিত শিক্ষা আগামী দিনে আরো ভালোভাবে কাজে লাগানোর মাধ্যমে সামাজিক কাজে এগিয়ে আসার আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপাচার্য।

ফার্মাসি বিভাগের প্রধান ও ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিস টিমের প্রধান অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সকল শহীদদের স্মরণ করে বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পর দেশের অনেক জায়গায় ই পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু আমাদের নোয়াখালীতে এর পর বিভিন্ন জনের পদত্যাগ এবং পরবর্তীতে বন্যার জন্য এক্সট্রা আমাদের সামাল দিতে হয়েছে। বন্যার সময় আমাদের শিক্ষার্থীরা বন্যার্তদের স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছিয়ে দিয়েছে। বন্যায় ফার্মাসিস্ট ছাত্রদের অবদানই বোঝা যায় এই ডিপার্টমেন্ট ছাত্রদের দখলেই ছেড়ে দিলে কতটা উপকৃত হবে। আমার ছাত্রদের অনেকেই রাতে বন্যার্তদের সাহায্য করে এমন অবস্থায় ফিরেছে যে ঠান্ডায় কথা বলতে পারে না। কিন্তু আবার সকালে বের হয়ে গেছে। দেশের ক্রান্তিকালে তোমাদের এমন অবদান অব্যাহত থাকলে আমরা ভালো থাকবো, আমাদের দেশ ভালো থাকবে। আমাদের উচিত নতুন প্রসাশন কে সময় দেওয়ার জন্য।আমার ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি ডিপার্টমেন্টের নাম উজ্জ্বল করার জন্য।

উল্লেখ্য, বন্যার্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে গত ২৩ আগস্ট থেকে ৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ৩২ টি টিম তাদের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম শুরু করে। ১৫ দিন যাবত ভলান্টিয়ার নিয়ে বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রায় ৮৬৫০ জন বন্যা দুর্গত ব্যক্তির মাঝে খাবার স্যালাইন, মেডিসিন, স্যানিটারি ন্যাপকিন, বেবি ফুড, ওয়াটার পিউরিফিকেশন ট্যাবলেট সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেয়।

সর্বাধিক পঠিত

নোবিপ্রবি ছাত্রী হলে অগ্নিকাণ্ড, পরীক্ষা স্থগিত

৮৬৫০ জন বন্যার্তদের মাঝে নোবিপ্রবি ফার্মাসি বিভাগের চিকিৎসা সেবা

আপডেট: ১০:০১:৪০ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মোসতাকিম সাদিক:
নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় বন্যার্তদের মাঝে জরুরি চিকিৎসা সেবা পৌছে দিয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ফার্মেসি বিভাগ পরিচালিত ‘ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিস’ টিম। ৮৬৫০ জনকে ৩ লক্ষ ৬২ হাজার ২ শত ২৫ টাকা চিকিৎসা সেবা দেওয়ার মাধ্যম এই কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম ভবনের আইকিউএসি রুমে এই ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিস এর কার্যক্রমের সমাপনী ও ভলেন্টিয়ারদের মাঝে সার্টিফিকেট বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান ও ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিস টিমের প্রধান অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ ইসমাইল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আয়োজনের শুরুতে এই কার্যক্রমের বিস্তারিত তুলে ধরেন ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিসের টিম লিডার মুহাম্মদ সোহাগ মিয়া বলেন, নোয়াখালী, ফেনি, লক্ষ্মীপুরের বন্যার্ত মানুষের পাশে যথাযথ চিকিৎসা সেবা প্রদানে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের উদ্যোগে গত ২৩ আগস্ট “ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিস” গঠন করে। জেলাত্রয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মেডিসিন, ওয়াটার পিউরিফিকেশন ট্যাবলেট, স্যানিটারি ন্যাপকিন, স্যালাইন সহ প্রাথমিক প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছে দেয় আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা। প্রথমত আমাদের ফার্মেসী বিভাগ নিজস্ব কিছু অর্থায়নে এই সেবা সমূহ চালু করলেও পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন জেলা হতে আমরা সাহায্য পেতে শুরু করি। বিভিন্ন কোম্পানি, এজেন্সি এবং ব্যক্তিগত ভাবে কিছু শিক্ষকমণ্ডলীদের সাহায্য আমাদের নিকট পৌছায়।

এছাড়াও ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের এ ধরনের উদ্যোগের সাথে যুক্ত থাকায় কৃতজ্ঞতা জানান বিভাগের শিক্ষকেরা।আগামীতেও সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এই ধরনের কার্যক্রমে যুক্ত থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিভাগের শিক্ষকরা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ ইসমাইল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করেন।উপাচার্য ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিস টিমের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন,একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু পড়াশোনা নয়,পড়াশোনার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকে।দুর্যোগ মূহুর্তে বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিতভাবে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছে।ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বন্যা দুর্গতদের সহযোগিতা করেছেন। সাধারণ মানুষ শুধুমাত্র ত্রাণসামগ্রী প্রদানের মাধ্যমে বন্যার্তদের সাহায্য করেছেন।কিন্তু ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা বন্যার্তদের চিকিৎসাসেবার মাধ্যমে যে টেকনিক্যাল সার্ভিস দিয়েছেন তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিস টিমের সাথে যারা বিভিন্নভাবে যুক্ত ছিলেন তাদের ধন্যবাদ জানাই।তরুণ শিক্ষার্থীরা এধরনের উদ্যোগে যুক্ত থাকার মাধ্যমে অর্জিত শিক্ষা আগামী দিনে আরো ভালোভাবে কাজে লাগানোর মাধ্যমে সামাজিক কাজে এগিয়ে আসার আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপাচার্য।

ফার্মাসি বিভাগের প্রধান ও ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিস টিমের প্রধান অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সকল শহীদদের স্মরণ করে বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পর দেশের অনেক জায়গায় ই পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু আমাদের নোয়াখালীতে এর পর বিভিন্ন জনের পদত্যাগ এবং পরবর্তীতে বন্যার জন্য এক্সট্রা আমাদের সামাল দিতে হয়েছে। বন্যার সময় আমাদের শিক্ষার্থীরা বন্যার্তদের স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছিয়ে দিয়েছে। বন্যায় ফার্মাসিস্ট ছাত্রদের অবদানই বোঝা যায় এই ডিপার্টমেন্ট ছাত্রদের দখলেই ছেড়ে দিলে কতটা উপকৃত হবে। আমার ছাত্রদের অনেকেই রাতে বন্যার্তদের সাহায্য করে এমন অবস্থায় ফিরেছে যে ঠান্ডায় কথা বলতে পারে না। কিন্তু আবার সকালে বের হয়ে গেছে। দেশের ক্রান্তিকালে তোমাদের এমন অবদান অব্যাহত থাকলে আমরা ভালো থাকবো, আমাদের দেশ ভালো থাকবে। আমাদের উচিত নতুন প্রসাশন কে সময় দেওয়ার জন্য।আমার ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি ডিপার্টমেন্টের নাম উজ্জ্বল করার জন্য।

উল্লেখ্য, বন্যার্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে গত ২৩ আগস্ট থেকে ৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ৩২ টি টিম তাদের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম শুরু করে। ১৫ দিন যাবত ভলান্টিয়ার নিয়ে বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রায় ৮৬৫০ জন বন্যা দুর্গত ব্যক্তির মাঝে খাবার স্যালাইন, মেডিসিন, স্যানিটারি ন্যাপকিন, বেবি ফুড, ওয়াটার পিউরিফিকেশন ট্যাবলেট সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেয়।